কুমিলস্নায় নির্মাণের দুই মাসের মধ্যে ধসে পড়েছে রিটার্নিং ওয়াল

প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না
কুমিলস্না সিটি করপোরেশন (কুসিক) এলাকার নোয়াগাঁও-বেলতলী সড়কের নোয়াগাঁও রেলগেটের পূর্ব অংশে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণের দুই মাস না যেতেই বৃহস্পতিবার অন্তত দুইশ মিটার ওয়াল ধসে পাশের খালে পড়েছে। এ ঘটনায় প্রায় দশ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের নির্মাণ কাজের গুণগতমান নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে নগরজুড়ে বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে এবং স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনসহ প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন। কুসিক সূত্রে জানা যায়, কুমিলস্না নগরীর উত্তর চর্থা নওয়াব বাড়ি চৌমুহনী এলাকা থেকে নোয়াগাঁও হয়ে নগরীর বেলতলী এলাকার ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দশ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তার পাশে দৃষ্টিনন্দন করে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণের কাজ পায় এমসিএইচএল এবং হক এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় দুই মাস আগে নোয়াগাঁও এলাকায় রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার নোয়াগাঁও রেলগেটের পূর্বদিকের রাস্তার পাশের রিটার্নিং ওয়ালটি সকাল ৯টার দিকে ধসে খালে পড়ায় স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকার আবদুল হান্নান, আমিরুল ইসলাম, আবু জাহেরসহ স্থানীয় বাসিন্দারা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, রিটার্নিং ওয়ালটি অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ হয়েছে। নোয়াগাঁও থেকে বেলতলী পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় এই রিটার্নিং ওয়ালের কোথাও বাঁকা ও ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই ওই প্রকল্পের পুরো কাজের গুণগতমান খারাপ হয়েছে দাবি করে তারা কাজটি পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কুসিকের স্থানীয় ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, 'আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ তদারকি করেছে। তাই রিটার্নিং ওয়াল ধসে পড়ার কারণ উদঘাটনসহ পরবর্তী করণীয় নিয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।' কুসিকের ভারপ্রাপ্ত সচিব ও নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েম ভূঁইয়া বলেন, 'এমসিএইচএল এবং হক এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে। আমি ঢাকা আছি। বিষয়টি জেনেছি। ধসে পড়া স্থানটি দেড়শ ফুট হতে পারে। ওই এলাকার কাজটি পুরো কাজের একটি আলাদা অংশ। ধসে পড়া কাজের সঙ্গে পুরো কাজের গুণগত মানের তুলনা করা যাবে না। প্রকল্পের কাজ এখনো চলছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়নি। তবে কি কারণে ওয়ালটি ধসে পড়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।' কুসিক মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু জানান, রিটার্নিং ওয়াল ধসে পড়ার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা উক্ত স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। ওই রাস্তা দিয়ে রেললাইন নির্মাণের ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ওয়ালটি ধসে পড়তে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।