বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে বরিশালে প্রচারণা

প্রকাশ | ২২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

বরিশাল অফিস
প্রচারণার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি মজিবর রহমান সরোয়ার
বরিশালে নিবার্চনী প্রচারণা এখন তুঙ্গে। শনিবার বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেও প্রচারণা চালিয়েছেন প্রাথীর্রা। প্রচারণায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রাথীর্ সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। বিএনপির প্রাথীর্ মজিবর রহমান সরোয়ারের পক্ষে গতকাল গণসংযোগে নেমে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ব্যালটের বাক্স একটি প্রতিবাদের বাক্স। এই প্রতিবাদের বাক্সে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুক। কারণ বুলেটের চেয়েও শক্তিশালী ব্যালট। জনগণের প্রতি আহŸান, গুম এবং খুনের যে রাজনীতি আওয়ামী লীগ করেছে, তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। তিনি বলেন, তারা চান একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নিবার্চন। কিন্তু তাদের সমান সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, তারা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন। যাতে তাদের ভোট অন্য কেউ না দিতে পারে। গণসংযোগকালে তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় বিএনপি সদস্য ও সাবেক সাংসদ মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম লাবু, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন দিপেন প্রমুখ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রাথীর্ সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ৩০ তারিখ ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবেন। তাদের যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে এই সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবেন। গতকাল বরিশাল নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউতে গণসংযোগকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, যার ডিজিটাল সম্বন্ধে কোনো আইডিয়া নেই, সেই বলতে পারে যে ইভিএমএ ডিজিটাল কায়দায় কারচুপি হতে পারে। তিনি ইভিএম চাচ্ছেন কারণ ইভিএম-এ একজনের ভোট আরেকজনের দেয়া সম্ভব নয়, আর ভোট গণনাটাও তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। এ সময় তিনি প্রতিদ্ব›দ্বী বিএনপির প্রাথীের্ক উদ্দেশ করে বলেন, তিনি (বিএনপির প্রাথীর্) ইভিএম চাননি, আমি তো বুঝেছিলাম সে বেশি করে ইভিএম চাইবে না। সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিবার্চন কমিশনের। তবে সেনা মোতায়েনের মতো কোনো পরিস্থিতি বরিশালে বিরাজমান নয়। গণসংযোগকালে তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় আ’লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুব উদ্দিন বীর-বীক্রম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করীম, সাইদুর রহমান রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একে এম জাহাঙ্গীর হোসেনসহ দলীয় নেতা-কমীর্রা উপস্থিত ছিলেন। প্রচারণায় বিএনপির পাশে নেই জামায়াত বরিশাল সিটি করপোরেশন নিবার্চনে ধানের শীষের প্রচারণায় বিএনপির পাশে নেই ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী। এ সিটিতে জামায়াতকে ছাড়াই বিএনপি ও এ দলের মেয়র পদপ্রাথীর্ নিবার্চনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জামায়াতের স্থানীয় নেতারা বলছেন, প্রচারণায় ২০ দলীয় জোটের মেয়র প্রাথীর্র পাশে থাকার নিদের্শনা আছে তাদের। তবে হামলা-মামলার ভয়ে তারা সে নিদের্শনা মেনে প্রচারণা চালাতে পারছেন না। ২০১৩ সালের বরিশাল সিটি করপোরেশন নিবার্চনে বিএনপি সমথির্ত মেয়র প্রাথীর্র পক্ষে সক্রিয়ভাবে প্রচারণায় অংশ নেয় জামায়াত। ওই সময় একটি ওয়াডের্ নিজেদের সমথির্ত একজন কাউন্সিলর প্রাথীর্ও ছিল জামায়াতের। এবার চারটি ওয়াডের্ জামায়াত নিজেদের কাউন্সিলর প্রাথীর্ দিয়েছে। এ চার কাউন্সিলর প্রাথীর্সহ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মেয়র প্রাথীর্ মজিবর রহমান সরওয়ারের পক্ষে প্রচারণায় মাঠে থাকার কথা জামায়াতের। কিন্তু আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে এ পযর্ন্ত তাদের প্রচারণার মাঠে দেখা যায়নি। তবে প্রথম ২০ জুলাই ২০ নম্বর ওয়াডর্ বিএনপির উঠান বৈঠকে ঐ ওয়াডের্র বাসিন্দা বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমির মুয়াযযম হোসেন হেলাল অংশ নেন। এ ব্যাপারে হেলাল বলেন, ‘আমরা প্রচারণা চালাতে পারছি না। কিন্তু কেন পারছি না এ প্রশ্ন নিবার্চন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসনকে জিজ্ঞাসা করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে আমরা নানা হামলা ও মামলায় সাংগঠনিক কোনো কাজই করতে পারছি না। এমনকি, আমরা পঁাচজন একসঙ্গে কোনো দাওয়াতেও যেতে পারি না। দলীয় কমীর্-সমথর্কদের ধানের শীষের প্রাথীর্র পক্ষে কাজ করার নিদের্শনা আছে। কিন্তু প্রচারে নামার আগেই আমাদের দুই কমীের্ক গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।’ এ ব্যাপারে মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আমিনুল ইসলাম খসরু বলেন, ২০০৮ সালের তুলনায় আমাদের সাংগঠনিক বিস্তার অন্তত ১০ গুণ বেড়েছে। কিন্তু আমরা তা প্রদশর্ন করতে পারছি না। তবে আগামী দিনগুলোতে জামায়াতকমীর্রা দলীয় নিদের্শনা অনুযায়ী কাজ করবে। মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি গ্রেপ্তার বরিশাল মহানগর জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যার পর নগরীর জমির উদ্দিন খান সড়ক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। কোতোয়ালি মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই সত্তরঞ্জন খাসকেল জানান, পূবের্র নাশকতার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।