অনশন ও নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি হকারদের

প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বিকল্প কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত ফুটপাতের এক-তৃতীয়াংশে দুপুর ১২টা থেকে হকারদের বসতে দেয়ার দাবি জানিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে এ ঘোষণা না এলে ২৫ এপ্রিল নগর ভবন ঘেরাও, ২৮ এপ্রিল ভুখা মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ২ মে আমরণ অনশনে বসবে হকাররা। শনিবার দুপুরে পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলানায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনটির কার্যকরী সভাপতি মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল। দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, '২০১৬ সালে ১৯ এপ্রিল একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী সিটি করপোরেশনগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নজির অনুসরণ করে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ না মেনে সিটি করপোরেশনগুলো হকার উচ্ছেদ শুরু করেছে।' 'রমজান মাস আসন্ন। হকাররা যাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে দু-মুঠো খেয়ে-পরে ঈদ করতে পারে তা মানবিক বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বিকল্প কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত ফুটপাতের এক-তৃতীয়াংশে দুপুর ১২টা থেকে হকারদের বসতে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।' হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াৎ বলেন, গত ২২ জানুয়ারি থেকে পুলিশ হকারদের ফুটপাত থেকে উচ্ছেদ শুরু করে। এই উচ্ছেদ অভিযানে ঢাকা মহানগরীর চার লাখ হকার বেকারে পরিণত হয়েছে। ফলে তাদের জীবন-জীবিকায় বিপর্যয় নেমে এসেছে। 'ঋণের কিস্তি, বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়ছে। কারও কারও ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও বন্ধের উপক্রম, অনেকেই অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।' হকারদের এ নেতা বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের পরমর্শে গত ৮ এপ্রিল এক গোলটেবিল বৈঠকে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার, রাজউক চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা বা তাদের কোনো প্রতিনিধ সেদিন থাকেননি। পরে ১১ এপ্রিল নগর ভবন ঘেরাও করে হকার ইউনিয়নের নেতারা মেয়রের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান। কিন্তু সেদিন মেয়র নগর ভবনে ছিলেন না বলে জানানো হয়। 'এ থেকে বোঝা যায় ঢাকা সিটির মেয়ররা হকারদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন।' পাঁচ বছরমেয়াদি হকার্স পুনর্বাসন মহাপরিকল্পনা তুলে ধরার পাশাপাশি হকারদের জন্য আইন প্রণয়নেরও দাবি জানান তিনি। ঢাকা শহর অচল করে দেয়ার মতো কর্মসূচির হুমকি দিয়ে সেকেন্দার হায়াৎ বলেন, 'ইচ্ছে করলে আমরা ঢাকা শহর অচল করে দিতে পারি। দাবি আদায়ে যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে তাতে সমাধান না এলে ঢাকা অচল করে দেয়ার মতো কর্মসূচিই আমরা নেব। কারণ আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।' সংগঠনটি সভাপতি আবুল হোসেন কবীরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মো. আবুল কালাম, মো. শহীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিম উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক হযরত আলী প্রমুখ।