'১৮ সালের নির্বাচন ছিল অশুভ আঁতাতের ফসল

সৈয়দপুরে বদিউল আলম মজুমদার

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মঙ্গলবার সৈয়দপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার -যাযাদি
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল অশুভ আঁতাতের ফসল। এ ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত কারো জন্যই শুভ নয়, এটি কোনো কল্যাণই বয়ে আনবে না। মঙ্গলবার সকালে সৈয়দপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সুজন সৈয়দপুর উপজেলা কমিটি আয়োজিত বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার ও নাগরিক ভাবনাবিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন ড. বদিউল আলম মজুমদার। এ সময় তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালে সরকার, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে অত্যন্ত অশুভ একটি আঁতাত হয়েছিল নির্বাচনকে একতরফাভাবে নিজেদের পক্ষে নেয়ার ক্ষেত্রে। এ কারণেই ভোট কেন্দ্রগুলো ভোটার শূন্য ছিল। জনগণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া তথা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বর্তমান সময়ে মানুষ চরম অস্থিরতার মধ্যে বসবাস করছে। নূ্যনতম নাগরিক অধিকার নেই কারোরই। তার মতে, কোনো দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে সে দেশে নানা অনিয়ম ও অরাজকতার বিস্তার ঘটে। এর ফলে সার্বিক রাষ্ট্রযন্ত্র দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যার সুযোগ নিয়ে বিপথগামী চক্র প্রভাব বিস্তার করে পুরো রাষ্ট্রকে করায়ত্ত করতে তৎপর হয়। আগের নির্বাচনগুলোর ব্যাপারে তিনি বলেন, এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনও ছিল একতরফা, যা দেশের ইতিহাসে কলংকময় অধ্যায় হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ইতঃপূর্বেও অনেক নির্বাচন একতরফাভাবে হয়েছে। তবে সেগুলোতে নির্বাচিত সরকার পরে সকল দলের মতামতের ভিত্তিতে কিছুদিনের মধ্যেই আবারও নির্বাচন দিয়েছিল। কিন্তুত্ম ২০১৪ সালের নির্বাচনে গঠিত সরকার তা করেনি। বরং কথা দিয়েও তারা কথা রাখেনি। এ ধরনের দৃষ্টান্ত গণতন্ত্রের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। সম্প্রতি শ্রীলংকায় সংঘটিত সিরিজ বোমা হামলার উদাহরণ টেনে বদিউল আলম বলেন, আমাদের দেশেও যদি গণতান্ত্রিক সুব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা না হয় তাহলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটার সমূহ আশংকা রয়েছে। যা কারোর জন্যই ভালো হবে না। তাই অনতিবিলম্বে চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সংস্কার করতে হবে। এ জন্য নাগরিকদের ভাবনাগুলোকে একত্রিত করে সে অনুযায়ী একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে তা সরকারসহ রাষ্ট্রের সব রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হবে। সে জন্যই আজকের এই মতবিনিময় সভার আয়োজন। তিনি এ সময় আরো বলেন, রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনে প্রারম্ভে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। সে সঙ্গে গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনভাবে কাজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ গণমাধ্যমগুলোর ওপর সরকারের করাল গ্রাস রয়েছে, তা থেকে মুক্ত হতে হবে। আর এ জন্য সর্বস্তরের নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। এ কাজ বেগবান করার জন্যই মূলত সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সংগঠন সুজনের সৃষ্টি। তিনি এক্ষেত্রে সৈয়দপুরের সকল নাগরিককে সুজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সুজন সৈয়দপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী (অব.) নুরুজ্জামান জোয়ারদার।