গবেষণা প্রতিবেদন

বছরে ভরাট হচ্ছে ৪২ হাজার একর জলাশয়

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি মেঘমালা সম্মেলন কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়

প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
নগর পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে মহানগর এলাকায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ জলাশয় থাকা উচিত। কিন্তু সারাদেশে প্রতি বছর গড়ে ৪২ হাজার একর জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। শুধু ঢাকার দুই সিটি এলাকা থেকে বছরে গড়ে ৫ হাজার ৭৫৭ একর জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। ১৯৯৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সময়ের ওপর করা এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) মেঘমালা সম্মেলন কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। 'ড্যাপ লঙ্ঘন করে ঢাকা ও এর চারপাশের জলাশয় ভরাটের চিত্র' শীর্ষক ওই সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পস্ন্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আদিল মোহম্মাদ খান। গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে আদিল মোহম্মাদ খান বলেন, সাভারে বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ১৭ হাজার ৪০৩ একর। এর মধ্যে ভরাট হয়েছে ২ হাজার ৮১৩ একর জায়গা। জলধারণ অঞ্চল ৩০ একরের মধ্যে ভরাট হয়েছে ২২ একর। জলাশয় ৩ হাজার ২০৪ একরের মধ্যে ভরাট হয়েছে ২৩০ একর। সব মিলিয়ে সাভারে ২০ হাজার ৬৩৮ একরের মধ্যে ৩০ হাজার ৬৫ একর ভরাট হয়েছে। গাজীপুরে মোট ১৩ হাজার ৮৪২ একরের মধ্যে ভরাট হয়েছে ২ হাজার ৩৬০ একর। রূপগঞ্জে ১৬ হাজার ৫৪২ একরের মধ্যে ভরাট হয়েছে ৬ হাজার ৭৮৬ একর। এছাড়া কেরানীগঞ্জে ২৬ হাজার ৪৭৪ একরের মধ্যে ৫ হাজার ৬৮৯ একর জলাশয় ভরাট হয়েছে। অপরদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৯ হাজার ৫৫৬ একরের মধ্যে ভরাট হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৩ একর। পাশাপাশি ঢাকা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০১০ এর মধ্যে এক লাখ ৯৩৭ একরের মধ্যে ২২ হাজার ৫১৬ একর জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে জলাশয় সংরক্ষণের জন্য কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। তা হলো- ভূমি ব্যবসায়ীদের অবৈধ কার্যকলাপ রোধে প্রচলিত আইনের সঠিক প্রয়োগ এবং শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। শহরের বর্জ্য মেশানো পানি যেন সরাসরি জলাধারে না যায়, সেটা নিশ্চিত করা। জলাশয়গুলো সংরক্ষণের মাধ্যমে ভূগর্ভের পানির রিচার্জ করা সম্ভব। নিরাপদ পানির উৎস বৃদ্ধি করতে জলাশয় সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এ ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভের পানির প্যাটার্ন ও ব্যাপ্তি অনুসরণের জন্য উপযুক্ত মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে টিআইবি, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদ, নিজেরা করি এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশ (এএলআরডি)। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এছাড়া আরও একটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিইজিআইএস গবেষণা সহযোগী ফিরোজ আহমেদ কনক। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, বুয়েট নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম, এএলআরডি নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রমুখ।