যশোরের এডিসি খালেদার দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খালেদা খাতুন রেখার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কাল ২৫ জুন খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে খালেদা খাতুন রেখা ও অভিযোগকারীদের উপস্থিত থাকার জন্য চিঠি ইসু্য করেছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ফিরোজ শাহ। যশোরের অতিরিক্ত এই জেলা প্রশাসক কেশবপুরের ভালুকঘর ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি। মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন মাদ্রাসার গভর্নিং বডির দাতা সদস্য ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা, নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য হায়দার আলী, মানজুরুল ইসলাম ও মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আব্দুলস্নাহ আল মাহফুজ। লিখিত অভিযোগকারী দাতা সদস্য ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা জানান, ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ৪টি কর্মচারী পদে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে ৫ মার্চ বৈধ প্রার্থীদের নামে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়। এর দু'দিন পর ৭ মার্চ ২০২৪ বৃহস্পতিবার নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব মামলার কারণ দেখিয়ে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করে নোটিশ জারি করেন। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তু এক দিন পর তিনি জানতে পারেন গোপনে পাতানো বোর্ড বসিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। স্থগিতের নোটিশ দেওয়ায় অন্তত ৭ জন প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবিধান এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারিকৃত পরিপত্রে উলেস্নখ আছে, এনটিআরসি বহির্ভূত পদে নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো মামলা থাকলে নিয়োগ কার্যক্রম চালানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিজির প্রতিনিধি অনুমোদন দেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন সভাপতি। তিনি তিনশ' টাকার স্ট্যাম্পে মিথ্যা হলফনামা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিজির প্রতিনিধি নিয়েছেন। অথচ যশোর সহকারী জজ ও চিফ জুডিশিয়াল আদালতে নিয়োগ সংক্রান্ত ৩টি মামলা চলমান। মামলা নং যথাক্রমে সিআর ৭৫/২৩, ৩৫৭/২৩ এবং ৫১/২৪। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবিধানে ১০ এর ৩ ধারায় বলা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে থেকে অধ্যক্ষ পদে আবেদন করতে পারবেন না। কিন্তু এই মাদ্রাসার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাছিহুর রহমান স্বপদে থেকে আবেদন করেছেন এবং গভর্নিং বডির সভাও আহ্বান করেন। পাতানো বোর্ডে সেই মাশিহুর রহমানকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার জন্য কমপক্ষে ১৫ দিন আগে বৈধ প্রার্থীদের ছবিসহ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পত্র দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেখানে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ৮ মার্চ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে ছবিবিহীন প্রবেশপত্র ছাড়া হয় (মাত্র দু'দিন আগে) গত ৫ মার্চ। এই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি এবং সদস্য সচিব অন্যদের সহায়তায় পাতানো নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ বাণিজ্য করেছেন। নিয়োগ বোর্ড গঠন ও নিয়োগ কার্যক্রম সংক্রান্ত কোনো সভায় গভর্নিং বডির অভিভাবক ও দাতা সদস্যদের ডাকা হয়নি। কমিটি সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা আরও বলেন, 'কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ভুয়া তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে কমিটি সংক্রান্ত ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া অভিযোগ এডিসি খালেদা খাতুন রেখার ওপর তদন্ত ন্যস্ত হয়।' তিনি একতরফাভাবে ওই তদন্ত করে প্রতিষ্ঠানে সভাপতি হয়েছেন এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন হওয়ার আগেই তিনি প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে অর্থ উত্তোলন করে তছরুপ করেছেন বলেও দাবি করেছেন ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খালেদা খাতুন রেখার দাপ্তরিক মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে সবকিছু বলা সম্ভব নয় উলেস্নখ করে অফিসে যাওয়ার জন্য বলেন।