বেনজীরের চার ফ্ল্যাটের দায়িত্ব বুঝে নিল রিসিভার কমিটি
প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট বুঝে নিল রিসিভার কমিটি। দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার সময় ফ্ল্যাটে থাকা মালামালসহ যাবতীয় জিনিসপত্রের তালিকা করা হয়। এর আগে কমিটি ফ্ল্যাটগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে।
সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে একটি দল ঢাকার গুলশানের ১২৬ নম্বর সড়কের ১ নম্বরর্ যাংকন আইকন টাওয়ার নামের বহুতল বাড়িটিতে থাকা বেনজীর আহমেদের চারটি ফ্ল্যাট পরিদর্শনে যায়। কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মঞ্জুর মোর্শেদ ছাড়াও সঙ্গে ছিলেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা। বাড়িটিতে থাকা বেনজীর আহমেদের চারটি ফ্ল্যাটের দায়িত্ব বুঝে নেয় কমিটি। বুঝে নেওয়ার আগে ফ্ল্যাটে থাকা যাবতীয় মালামালের একটি তালিকা করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুন আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক দুদককে রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯ দশমিক ৭৫ কাঠা জমির ওপর ১৫ তলা ওই ভবনটিতে ২৫টি অ্যাপার্টমেন্ট, ২টি বেজমেন্ট, ৩৭টি কার পার্কিং আছে। ভবনটির ৪টি ফ্ল্যাট একসঙ্গে ২০২৩ সালের ৫ মার্চ কিনে নেন বেনজীর আহমেদ। অবসরে যাওয়ার ৬ মাসের মধ্যেই সেগুলো কিনে নেন। যার মধ্যে ২টি ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ২৪২ বর্গফুট ও বাকি ২টির আয়তন ২ হাজার ৩৫৩ বর্গফুট। এর মধ্যে তিনটি ফ্ল্যাট বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে এবং অপরটি ছোট মেয়ের নামে কিনেন। জীশান মীর্জা সাভান্না ইকো রিসোর্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান।
উলেস্নখ্য, গত ২৩ ও ২৬ মে দুদকের দুই দফায় করা আবেদনের প্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির শেয়ার জব্দের (ক্রোক) নির্দেশ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। ২৩ মে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা প্রায় ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি এবং ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেন আদালত। বেনজীর আহমেদের পরিবারের নামে এখন পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া ২০৫ একর সম্পদের মধ্যে ১৪২ একর (৪৬৮ বিঘা) রয়েছে স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে। গত ২৬ মে বেনজীর আহমেদের পরিবারের নামে থাকা ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। এগুলোর মধ্যে ঢাকার সদস্য দায়িত্ব নেওয়া গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাট, সাভারের একটি জমি ছাড়াও মাদারীপুরের ১১৪টি দলিলের সম্পত্তি রয়েছে।
সেই সঙ্গে ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও তার সিকিউরিটিজের (শেয়ার) টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। দুই দফায় ৬২১ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আদালতের নির্দেশে পুঁজিবাজারের ইলেকট্রনিক্স শেয়ার সংরক্ষণাগার সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) বেনজীর আহমেদের পরিবারের নামে থাকা সব বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) ফ্রিজ করে রাখতে নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
প্রসঙ্গত, গত ২ জুলাই বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মীর্জা, জ্যেষ্ঠ কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর এবং মেজো কন্যা তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের সম্পদের হিসাব চেয়ে আলাদা আলাদা সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে দুদক। গত ২৭ জুন আদালতের নির্দেশনায় দুদককে রিসিভার নিয়োগ দেয়।