সেনাসদরে প্রধানমন্ত্রী

গণতন্ত্র সুসংহত করতে সহায়ক হয় সেনাবাহিনী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব কিছুর ঊধ্বের্ থেকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার-বিশ্লেষণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দেশপ্রেমিক যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে বের করতে হবে’

প্রকাশ | ২৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ঢাকা সেনানিবাসে হেলমেট কনফারেন্স কক্ষে সেনাসদর নিবার্চনী পষের্দর সভার শুরুতে ঊধ্বর্তন সেনা কমর্কতাের্দর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন Ñবাসস
দেশের গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত এবং সুসংহত করতে সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেনাসদর নিবার্চনী পষের্দর বৈঠকে সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনীর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ‘সুশিক্ষিত, কমর্ক্ষম, সচেতন, বুদ্ধিমান এবং সবোর্পরি গণতন্ত্রকে সুসংহত করার জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ের অধিকারী এরূপ যোগ্য অফিসারদের কাছে নেতৃত্ব ন্যস্ত করতে হবে।’ ‘একটি দেশের গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত এবং সুসংহত করতে একটি সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।’ ঢাকা সেনানিবাসের সেনাসদরের হেলমেট কনফারেন্স কক্ষে রোববার এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর ঊধ্বর্তন কমর্কতাের্দর উদ্দেশে বলেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আধুনিক, উন্নত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনিমাের্ণ সেনাবাহিনীকে অবশ্যই গুরুত্বপূণর্ অবদান রাখতে হবে। এ জন্য যোগ্য, দক্ষ, কমর্ক্ষম এবং দেশপ্রেমিক অফিসারদের হাতে এর নেতৃত্ব ন্যস্ত করতে হবে।’ উপস্থিত জেনারেলদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনাদের সব কিছুর ঊধ্বের্ থেকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার-বিশ্লেষণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দেশপ্রেমিক যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে বের করতে হবে।’ সেনাবাহিনীর যেসব জ্যেষ্ঠ কমর্কতার্ পষের্দ দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের ওপর আস্থা রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊধ্বের্ উঠে আপনারা ন্যায়-নীতির ভিত্তিতে উপযুক্ত নেতৃত্ব নিবার্চনে সবের্তাভাবে সফল হবেন।’ সেনাবাহিনীর কমর্কতাের্দর পদোন্নতির জন্য ট্রেইস পদ্ধতি প্রচলন করা হয়েছে, যা পেশাগত দক্ষতার বিভিন্ন দিকের তুলনামূলক মূল্যায়ন প্রকাশ করে। নিবার্চনী পষর্দ উপযুক্ত কমর্কতাের্দর পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের কথা স্মরণ করেন। ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন এবং ১৯৭২ সালে কুমিল্লায় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা উন্নত, পেশাদার এবং প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা প্রণীত নীতিমালার আলোকে আমরা ‘আমর্ড ফোসের্স গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছি।’ সপ্তম জাতীয় সংসদ নিবার্চনের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সেনাবাহিনীর উন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। তবে তা মোকাবেলা করার সক্ষমতা থাকতে হবে।’ সেনা সদস্যদের মনোবল বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও কল্যাণমুখী পদক্ষেপ নেয়ার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ট্রাস্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন। সেনা আবাসন প্রকল্প এবং বহুতল সরকারি পারিবারিক বাসস্থান নিমার্ণ করা, সেনা সদস্যদের উন্নতমানের ও বধির্ত স্কেলে রেশন সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং দুস্থভাতা বাড়ানোর কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। সেনাবাহিনীর কমান্ডো সদস্য, এভিয়েশন ইউনিটের বৈমানিকদের উড্ডয়ন ঝুঁকি বীমার আওতায় আনার কথাও বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী একাগ্রতা, কমর্দক্ষতা এবং নানা জনসেবামূলক কমর্কাÐের জন্য সাবর্জনীন আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অজর্ন করেছে।’ রোহিঙ্গা সংকটে সেনাবাহিনীর কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের জোরপূবর্ক বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের সহায়তায় সেনাবাহিনী অত্যন্ত প্রশংসার সঙ্গে কমর্কাÐ চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূতিের্ক আরও উজ্জ্বল করছে।’ এই বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভঁূইয়া উপস্থিত ছিলেন।