মেরামত শেষে সচল হলো আনোয়ারা-ফৌজদারহাট গ্যাস পাইপলাইন

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

চট্টগ্রাম বু্যরো
চীনা কোম্পানির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ড্রিলিংয়ের সময় ছিদ্র হয়ে যাওয়া ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের চট্টগ্রামের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট গ্যাস পাইপলাইন দুই দিনের প্রচেষ্টায় মেরামত শেষে পুনরায় কমিশনিং শুরু করেছে। শুক্রবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে গ্যাস কমিশনিং শুরু হয় বলে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ জিটিসিএলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। কোম্পানির এক বার্তায় বলা হয়, জিটিসিএলের ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইনের ক্ষতিগ্রস্ত পাইপ দ্রম্নততম সময়ে মেরামত ও গ্যাস কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। বিকাল হতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। এলএনজি সাপস্নাই ও গ্যাসগ্রিডের প্রেসারের (বর্তমান ৭০ পিএসআই) সঙ্গে সিনক্রোনাইজ করে পর্যায়ক্রমে গ্যাস সঞ্চালন ও চাপ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কর্ণফুলী টানেল ও কাফকোর মধ্যবর্তী স্থানে গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে দুর্ঘটনায় ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইন ছিদ্র হয়। একটি চাইনিজ কোম্পানির অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটলেও জিটিসিএলকে এই কাজের বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। জিটিসিএল বা সরকারের পক্ষ থেকেও ওই প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা হয়নি। বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সব পাইপলাইনের ম্যাপ রাখার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ম্যাপিং হাতে থাকলে এ রকম দুর্ঘটনা ঘটবে না। গ্রাহক ভোগান্তি লাগব করতে নিয়মিত মনিটরিং বাড়ানোর কথাও বলেছেন তিনি। জিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর আনোয়ারা প্রান্তে জিটিসিএলকে কিছুই না জানিয়ে তাদের ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের একটি পাইপের ওপর চীনা কোম্পানির নিয়োগ করা একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান খনন কাজ চালাতে গিয়ে সেটি ছিদ্র করে ফেলায় সরবরাহ সংকট তৈরি হয়। মঙ্গলবার বিকালে খনন কাজের একপর্যায়ে সঞ্চালন লাইন ছিদ্র হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে মাটির ১০ মিটার গভীরে গ্যাসের ফেনা জমতে শুরু করে। জিটিসিএলের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, কর্ণফুলী নদী তীর থেকে ৫০০ মিটার দূরে মাটির ১০ মিটার গভীরে পাইপলাইনটির অবস্থান। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এর তথ্য মতে, চট্টগ্রামের ছোট-বড় ১ হাজার ২০০ কারখানায় গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হয়। মোট গ্যাসের চাহিদা ৩০ থেকে ৩২ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে শিল্পকারখানায় গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৮ থেকে ১০ কোটি ঘনফুট। পেট্রোবাংলার প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সারাদেশে ২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা গেলেও বুধবার তা ২ হাজার ৪৬৪ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে আসে। গ্যাস সরবরাহ আরও কমতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা ধারণা দিয়েছিলেন। জ্বালানি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। আমদানি করা এলএনজি মিশ্রণের পর সরকার সর্বোচ্চ ৩ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের যোগান দিতে পারে। ছিদ্র হওয়া পাইপলাইন বন্ধ রাখায় সব মিলে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় শিল্প ও আবাসিক খাতে বিদু্যৎ সংকট বেড়ে গিয়েছিল।