শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে তবে উপস্থিতি কম
প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এদিন সকালে রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করে। তবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষার্থী উপস্থিতি একেবারেই কম।
এর আগে সোমবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।
কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনের এক পর্যায়ের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
একই কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান) এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শ্রেণি কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধের ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কারফিউ ওঠার পর মঙ্গলবার থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। আবাসিক হলে কেবল বৈধ শিক্ষার্থীদের ওঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মঙ্গলবার থেকে খোলা এবং হলে বৈধ শিক্ষার্থীদের ওঠানো ও হলসমূহের সেবা কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষাসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম দ্রম্নত সময়ের মধ্যে চালু করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
জাবিতে শিক্ষার্থীদের আনন্দ মিছিল
আমাদের জাবি প্রতিনিধি জানান, শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও স্বৈরাচারের পতন হওয়ায় বিজয় মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে দ্রম্নত সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিজয় মিছিলটি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। বিজয় মিছিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সিনেট সদস্য ও স্থানীয় সাধারণ জনতাও যোগদান করেন। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ উদযাপন করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। কেন্দ্রীয় জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের হামলার সঙ্গে শিক্ষক, ছাত্রলীগসহ যারা জড়িত ছিলেন সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। মিছিল শেষে দুপুর তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর শুধু পদত্যাগ করলেই হবে না, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। যাদের নির্দেশে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল তাদের প্রত্যেকেরই বিচার করতে হবে।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহসান লাবিব বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এই স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে। তাই আমাদের সবারই দায়িত্ব এই সফলতা ধরে রাখা। সেই সঙ্গে দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেনাশাসন চাই না। তাই দ্রম্নত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হোক।'