ঋণ বিতরণে বেসরকারি ব্যাংকের রেকডর্

প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
তারল্য সংকট ও উচ্চ সুদ হারের পরও বিদায়ী অথর্বছরে রেকডর্ পরিমাণ ঋত দিয়েছে দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। ২০১৬-১৭ অথর্বছরের তুলনায় ২০১৭-১৮ অথর্বছরে বেসরকারি ব্যাংকের ঋত বেশি দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। শুধু গত অথর্বছরেই নয়, পঁাচ বছরের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ঋত দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋত বিতরণ সংক্রান্ত সবের্শষ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অথর্বছর শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ঋত দিয়েছে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬২১ কোটি টাকা। আগের অথর্বছরে এ সব ব্যাংকের ঋত দেয়ার পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ ব্যাংক সংগৃহীত আমানতের ৮৫ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংক ৯০ শতাংশ ঋণ দিতে পারে। অতিরিক্ত ঋত দেয়ার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিদের্শনা অতিক্রম করে বেশ কয়েকটি ব্যাংক। এ কারণে তাদের জরিমানাও করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সতকর্ করে চিঠি দেয় আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে। বিতরণ করা অতিরিক্ত ঋণসীমা চলতি বছরের ১ ডিসেম্বরের মধ্যে নামিয়ে আনার নিদের্শ দেয়া হয়। তবে ব্যাংক মালিকদের আবেদনে তা কাযর্কর হচ্ছে আগামী বছরের জুলাই থেকে। আর এ সব কারণে বিদায়ী অথর্বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে চরম তারল্য সংকটে (নগদ মুদ্রার সংকটে) পড়ে যায় দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। বেড়ে যায় ঋণ ও আমানতের সুদহার। পরে বেসরকারি ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ শুরু করে। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। পরে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ রাষ্ট্রীয় ব্যাংক থেকে বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সুযোগ দেয়া হয়। নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) কমানো হয় এক শতাংশ। তারল্য সংকট এবং উচ্চ সুদের হারের মধ্যেও ৫ বছরের মধ্যে রেকডর্ পরিমাণ ঋত দেওয়ার বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকাসর্ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নিবার্হী কমর্কতার্ সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি ও বেসরকারি মালিকানায় অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে দেশে। এতে আমদানি ব্যয়ও বেড়ে গেছে। অথর্বছরের প্রথমাধের্ ঋত বিতরণ বেশি হওয়ায় দ্বিতীয়াধের্ এসে তারল্য সংকট হয়েছে। পরে এর সমাধান করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ অথর্বছরে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল। যা আগের অথর্বছরের চেয়ে ৯৬ হাজার ৪১০ কোটি টাকা বেশি। একইভাবে ৯৫ হাজার ১৪১ কোটি টাকা বেশি ঋত দেয়া হয়েছিল ২০১৪-১৫ অথর্বছরে। ওই সময়ে ঋণ দেয়ার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। আর ২০১৩-১৪ অথর্বছরে দেয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। এ বিষয়ে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, দেশে যেভাবে উন্নয়ন ও কমর্সংস্থান হচ্ছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তার অধেের্কর বেশিতে ভ‚মিকা রাখছে বেসরকারি ব্যাংক। আর এসব উন্নয়ন চলমান রাখতে ব্যাংকগুলো বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে। যে কারণে কয়েক বছরের তুলনায় ঋত বিতরণ বেড়েছে।