সচিবালয়ে মতবিনিময়

এবার 'দ্বিতীয় ইনিংস' দেখতে চান কাদের

প্রকাশ | ২০ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর রোববার সচিবালয়ে আসেন। এ সময় তিনি চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ক সভায় অংশগ্রহণ এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন -বাংলানিউজ
অসুস্থতা কাটিয়ে আড়াই মাস পর মন্ত্রণালয়ে ফিরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরুর কথা বলেছেন, যাকে তিনি আখ্যায়িত করছেন 'দ্বিতীয় ইনিংস' হিসেবে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর রোববার প্রথম সচিবালয়ের কার্যালয়ে এসেই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ক সভা এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সেখানেই তিনি বলেন, 'প্রথম ইনিংস শেষ করেছি। ইনশালস্নাহ আমি এবার দ্বিতীয় ইনিংস খেলব।' 'দ্বিতীয় ইনিংস'-এর ব্যাখ্যায় কাদের বলেন, 'মেগা প্রজেক্টগুলোর কাজ শেষ করা, যানজট নিরসন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, দ্বিতীয় ইনিংসে এগুলো হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব ইনশাআলস্নাহ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব।' হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ সিওপিডিতে (ক্রনিক অবসট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) আক্রান্ত ওবায়দুল কাদের গত ৩ মার্চ সকালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এনজিওগ্রামে কাদেরের হৃদপিন্ডের রক্তনালিতে তিনটি বস্নক ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটি বস্নক স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করেন চিকিৎসকরা। এরপর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে গত ৪ মার্চ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা শেষে দুই মাস ১১ দিন পর গত বুধবার সন্ধ্যায় দেশে ফেরেন সেতুমন্ত্রী। রোববার কাদের বলেন, 'দুই মাস ১৬ দিন আগে সর্বশেষ আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলি। এরপর অসুস্থ হয়ে অনেক দূরে ছিলাম। হয়তো পৃথিবী থেকেই অনুপস্থিত ছিলাম। সবার দোয়ায় আমি সুস্থ হয়েছি।' নিজের বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'শারিরীকভাবে এখন সুস্থ হলেও শরীর অনেক দুর্বল। দুই মাস পরপর চেকআপে যেতে হবে। আগামী ১৬ জুলাই সিঙ্গাপুরে যেতে হবে। একটু সতর্কভাবে চলতে বলেছেন চিকিৎকরা। ভারী কাজ বা অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে বারণ করেছেন। এক-দেড় মাস পর আবার পুরোদমে আগের মতোই সব কাজ করতে পারব।' এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় সচিবালয়ে আসার পর ওবায়দুল কাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মন্ত্রী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশংসা করে বলেন, 'আমি অনুপস্থিত থাকলেও এরা খুব ভালোভাবে কাজ করেছে। টিম ওয়ার্ক চেয়েছিলাম, তা আমি পেয়েছি এবং প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রশংসা করেছেন।' এরপর এবারের ঈদযাত্রা নিয়ে কথা বলেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে জানিয়ে কাদের বলেন, 'ঈদকে সামনে রেখে এবারকার প্রস্তুতি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। 'আমাদের সবচেয়ে বড় সংকটের জায়গা দুটি রুট। একটা হচ্ছে ঢাকা-গাজীপুর-টাঙ্গাইল উত্তরাঞ্চলের। এখানে সংকটটা হয়, এখানে যানজট হয়। মানুষের দুর্ভোগ হয়। ঘরমুখী যাত্রীরা সীমাহীন কষ্টের মধ্যে বাড়ি যান।' তিনি বলেন, 'ঢাকা-চট্টগ্রামেও সমস্যা হয় মূলত তিনটি ব্রিজের কারণে। আমার অনুপস্থিতিতে কাঁচপুর ব্রিজের শুভ উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী করেছেন। আগামী ২৫ মে মেঘনা-গোমতি সেতু উদ্বোধন হবে। এরপর ঢাকা-চট্টগ্রামে ঈদের সময় যে দুর্ভোগ-ভোগান্তি- এইগুলো কমে যাবে। সম্পূর্ণ সহনীয় মাত্রায় থাকবে- এটা আমরা বলতে পারি। আমাদের গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইল অংশে.. এখানেও ভোগান্তি কম হবে।' স্বাস্থ্যগত কারণে নিজে প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় থাকতে না পারলেও কাজের অগ্রগতি থেমে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।