অন্তর্বর্তী সরকারকে মির্জা ফখরুল
নির্বাচনের দিকে নজর দিন চক্রান্ত কিন্তু শেষ হয়নি
প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
অন্যান্য বিষয়ের দিকে নজর না দিয়ে নির্বাচনের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি ঘোষণার প্রসঙ্গ টেনে বুধবার এক আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি করার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একটু পরামর্শ করবেন- এটা প্রত্যাশা ছিল। তবে এটাকে বড় ধরনের সমস্যা মনে করছি না। আমরা মনে করি, দ্রম্নত ইলেকশন কমিশন হোক এবং ইলেকশন কমিশন অতিদ্রম্নততার সঙ্গে তাদের কাজটা করবেন।'
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেছেন, ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করে দিয়েছে এই আওয়ামী লীগের লোকেরা। এ জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতায় তাদের বিচার হওয়া উচিত, বড় শাস্তি হওয়া উচিত। কারণ, তারা রাষ্ট্রকে ধ্বংস করেছে। অর্থনীতি ফোকলা হয়ে গেছে। কিচ্ছু নাই ভেতরে। প্রশাসন এখন পর্যন্ত মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না কেনো? আওয়ামী লীগ তাদের (প্রশাসন) যে
চরিত্র সৃষ্টি করেছে, সেটা দূর করা যাচ্ছে না, খুঁজে পাওয়া যায় না একটা ভালো লোক। প্রশাসনের মধ্যে ঘুষ খায় না, স্বজনপ্রীতি করে না, দুর্নীতি করে না- এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। শিক্ষক থেকে শুরু করে, চিকিৎসক থেকে শুরু করে, আইনজীবী থেকে শুরু করে, প্রশাসক থেকে শুরু করে বেশির ভাগ জায়গায় দুর্নীতি। তারা এভাবে ১৫-১৬ বছরের জঞ্জাল সৃষ্টি করে গণতন্ত্রকে তিলে তিলে হত্যা করেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। বড় ক্রিটিক্যাল। এই মুহূর্তে শুধু আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো হঠকারিতার কারণে যদি ভুল হয়ে যায়, তাহলে আমরা রাষ্ট্র হিসেবে বড় বিপদে পড়ে যাব। কারণ, আমাদের বিপদগ্রস্ত করার জন্য, আমাদের অস্তিত্বকে বিপণ্ন করার জন্য অনেক চেষ্টা করা হচ্ছে। এ কথাগুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।'
তিনি বলেন, 'যুদ্ধ শেষ হয় নাই, রাজনীতি ও সংগ্রাম কখনো শেষ হয় না। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কখনই সংস্কার স্থায়ীত্ব হবে না। এটা মাথায় রাখতে হবে। ওপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে কোনো সংস্কার সফল হয় না। আইয়ুব খান চেষ্টা করেছেন, এরশাদ চেষ্টা করেছেন, সেটা সম্ভব হয়নি।'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'অনেক ইসু্য সামনে আসবে। একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে যে, চক্রান্ত কিন্তু শেষ হয়নি। ফ্যাসিস্টরা তাদের মূল লোক চলে গেলেও তাদের কাঠামো ফ্যাসিস্ট রয়ে গেছে। সেখানে এখনো যারা অবস্থান করছেন, তারা কাজ করছে। ওই ব্যক্তির পরিবর্তন হলেও কাঠামোর পরিবর্তন হয় নাই।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, এই সরকারের ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই, যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি সারা পৃথিবীতে সমাদৃত এবং তিনি বলেছেন, তার কোনো রকমের কোনো রাজনৈতিক ইচ্ছা নাই। সেই কথা ধরে আমি বলতে চাই, সজাগ দৃষ্টি রাখবেন, আপনার সম্মানের জায়গাটা যাতে নষ্ট না হয়।'
এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে সভায় জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক আবদুল হালিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপিকে যারা ভালোবাসে আগামীতে তাদেরই দিন : দুদু
এদিকে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিএনপি, তারেক জিয়া, শহীদ জিয়া এবং খালেদা জিয়াকে যারা ভালোবাসে আগামীতে তাদেরই দিন আসছে। সে জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। এই ঐক্যই সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বাংলাদেশ কর্মজীবী দল গাজীপুর মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজনীতির পরিবর্তন না হলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না : রুমিন ফারহানা
বিএনপির আন্তর্জাতিক-বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, রাজনীতির পরিবর্তন না হলে শুধু সরকার পতনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। রাজনীতি যদি ঠিক না হয়, তাহলে একটা নির্বাচন, একটা শাসন পরিবর্তন কখনো মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে পারবে না।
তিনি বলেন, রাজনীতি পরিবর্তনের দায়িত্ব শুধু রাজনীতিবিদদের নয়, এখানে জনগণের দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই রাজনীতিবিদদের দুর্বৃত্তায়িত হওয়ার কতটুকু স্বাধীনতা দেবেন, সেটা আপনারা জনগণই নির্ধারণ করবেন। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুষ্ঠু ধারার রাজনীতির জন্য জনগণকে এটির পরিবর্তন করতে হবে।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'গণ-অভু্যত্থান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র : নাগরিক বিতর্ক' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদ।