পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে বেল্ট সানগস্নাস কেনার পালস্না

প্রকাশ | ২১ মে ২০১৯, ০০:০০

এস এম মামুন হোসেন
ঈদের নতুন পোশাকের সঙ্গে চাই মানানসই বেল্ট ও সানগস্নাস। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও তাদের পছন্দ মতো বেল্ট ও চশমা কিনতে ভিড় জমাচ্ছে বিপণিবিতানগুলোতে। ছবিটি সোমবার রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড থেকে তোলা -আমিনুল ইসলাম শাহীন
জিনিস ছোট কিন্তু ফ্যাশনে অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ সানগস্নাস ও বেল্ট। এ কারণে ঈদের বাজারে পোশাকের পাশাপাশি এ দুটিতে তরুণদের বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। ঈদের বাজার শুরুর পর এরই মধ্যে বেল্ট ও সানগস্নাসের বাজারে ক্রেতার ভিড় বেড়েছে। সামনের দিনগুলোতে তা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সাধারণত চশমা ও বেল্ট একই দোকানে বিক্রি হয়। এ কারণে একটির সঙ্গে অন্যটির সম্পর্কও রয়েছে। একটির বিক্রি বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই অন্যটির বিক্রির ওপরও তার প্রভাব পড়ে। ফ্যাশনেবল তরুণদের কাছে ঈদের সময় সানগস্নাসের গুরুত্ব খুবই বেশি। অনেক তরুণ মনে করেন সানগস্নাস ছাড়া ঈদ অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। প্রতি বছর ঈদের সময় বিপুল সংখ্যায় সানগস্নাস বিক্রি হয়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। আবার যেসব তরুণ জিন্স পরে থাকেন তাদের কাছে উন্নতমানের বেল্টের কদরও খুব বেশি। বলা হয়ে থাকে জিন্সের সৌন্দর্য পরিপূর্ণতা পায় বেল্টের মাধ্যমে। এ কারণে বেল্টের প্রতিও তীব্র ঝোঁক রয়েছে তরুণদের। বেল্টের মধ্যে লেদার, রক্সিন, স্টিচ ও চামড়ার বেল্ট রয়েছে। তবে এসব বেল্টের মধ্যে চামড়ার বেল্টের কদর সবচেয়ে বেশি। যদিও দাম একটু বেশি, তবে টেকসই হওয়ার কারণে চামড়ার বেল্টই সবাই পছন্দ করেন। এ ছাড়া চামড়া ও অন্যান্য উপাদানের সংমিশ্রণে তৈরি বিভিন্ন ধরনের বেল্টেরও কদর রয়েছে বাজারে। সানগস্নাস এবং বেল্ট উভয়টির ক্ষেত্রেই বাজারে জোগানের দিক দিয়ে চায়না ও ভারতের পণ্যই শোভা পাচ্ছে। বিক্রেতারা জানালেন, দেশি বেল্ট ও সানগস্নাসের মান বেশি ভালো না। আবার যা আছে তাও যথেষ্ট ফ্যাশনেবল না হওয়ায় তা তরুণদেরকে আকৃষ্ট করতে পারছে না। কয়েকজন বিক্রেতা জানালেন এ বিষয়ে দেশি উদ্যোক্তাদের যেমন নতুনত্বে আগ্রহ নেই তেমনই সরকারি পর্যায় থেকে পৃষ্ঠপোষকতাও নেই। এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি পণ্যের ক্ষেত্রে বিদেশিরাই একচেটিয়াভাবে ব্যবসা করছে। ফ্যাশনেবল সানগস্নাসের মধ্যে হালকা লাল-কালচে রংটির প্রাধান্য সবচেয়ে বেশি। এ রংটির সঙ্গে সৌর কালারের মিল থাকায় এই গরমে এটির কাটতি বেশি। তবে এর বাইরে অন্য রংও চলছে। যেগুলোর মধ্যে বেগুনি, হলুদসহ অন্য রংগুলোই প্রধান। তবে শুধু গস্নাসের রং দেখেই তরুণরা সানগস্নাস কিনছেন না। বরং এর বাঁটের রং ও কতটা মজবুত সেটিও দেখছেন ক্রেতারা। কয়েকজন তরুণ জানালেন সানগস্নাসের ক্ষেত্রে গস্নাসের রং ও মান যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনই গুরুত্বপূর্ণ এর বাঁট। কারণ বাঁট ভালো না হলে সানগস্নাসে জৌলুস আসে না। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের একটি দোকানে সানগস্নাস কিনতে আসা একজন ক্রেতা মো. রাসেল বলেন, 'সানগস্নাসের গস্নাসের রং এবং সৌন্দর্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনই গুরুত্বপূর্ণ এর বাঁটের রং ও কতটা মজবুত তাও। কারণ সামনে থেকে গস্নাসের রং দেখা যায়। কিন্তু পাশ থেকে এর সামনের গস্নাসের চেয়ে বাঁটই বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া বাঁট গস্নাসের সৌন্দর্যও বাড়িয়ে থাকে। তবে বাঁট মজবুত না হলে পুরো গস্নাসটিই ভেঙে যেতে পারে। তাই গস্নাসের চেয়ে এর বাঁটকে মোটেও কম গুরুত্ব দিয়ে দেখার সুযোগ নেই। বরং অনেক ক্ষেত্রে বাঁটই পুরো চশমার সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।' পিপাস রহমান নামের আরেক ক্রেতা অবশ্য জানালেন তার কাছে সানগস্নাসটিই গুরুত্বপূর্ণ। তার ভাষায়, 'ঈদের সময় সানগস্নাস ছাড়া ঈদ আনন্দ কোনো মতেই পূর্ণতা পায় না। ঈদের সৌন্দর্য পরিপূর্ণ করে একটি সুন্দর সানগস্নাস। তাই প্রতি ঈদে পোশাকের পাশাপাশি সানগস্নাসও সমান গুরুত্ব দিয়ে কিনে থাকি।' এখনকার তরুণরা সাধারণ প্যান্টের চেয়ে জিন্সের প্যান্টকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। জিন্স পরে না এমন তরুণ খুব কমই পাওয়া যাবে। তবে জিন্সের কোমর যেহেতু খুব বেশি টাইট করা যায় না তাই প্রায় সব জিন্স প্যান্ট পরা ব্যক্তিদেরকেই বেল্ট ব্যবহার করতে হয়। আগে নরম কাপড়ের প্যান্টে শুধু ইন করার জন্য মানুষ বেল্ট পছন্দ করত। তবে তারও প্রচলন ছিল কম। আবার বেল্টের ভেতর তেমন ফারাকও ছিল না। ফলে বৈচিত্র্যহীন ছিল সে সময়ের বেল্ট। কিন্তু এখন প্রায় সকলেই জিন্স পরায় উন্নত মানের বেল্টের কদরও বেড়েছে ব্যাপকভাবে। আর ঈদের সময় তা বেড়ে যায় আরও কয়েক গুণ। তাই সানগস্নাসের মতোই বেল্টের বাজারও এখন বেশ গরম। নিউমার্কেটের নিউ সুপার মার্কেট এলাকায় দেখা যায় তাহমিদ হোসেন নামের এক যুবক নিজের প্যান্টের সঙ্গে বেল্ট মেলাচ্ছেন। তিনি বলেন, 'এখনতো সবাই জিন্সই পরে। জিন্সের সঙ্গে মানসম্মত বেল্টের একটি সম্পর্ক রয়েছে। সুন্দর বেল্ট ছাড়া জিন্সের সৌন্দর্য সম্পূর্ণভাবে ফুটে ওঠে না। তাই ঈদের সময় অন্য পোশাকের পাশপাশি একটি ভালো বেল্টও কিনতে হয়।' এলিফ্যান্ট রোডে বেল্ট ও সানগস্নাস একই দোকানে বিক্রি করেন মাহমুদুল হাসান। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, 'ঈদের সময় সানগস্নাস ও বেল্ট দুটিই ভালো চলে। কিন্তু এখন গরমের সময় হওয়ায় সানগস্নাসের চাহিদা খুব বেশি। রঙিন সানগস্নাসই তরুণরা বেশি পছন্দ করছেন। তবে সাধারণ সানগস্নাসও একেবারে কম চলে না। মানুষের রুচি চাহিদার ওপর ভিত্তি করে সানগস্নাস বিক্রিতেও ভিন্নতা রয়েছে। আর বেল্টের ক্ষেত্রে এখন আর শুধু তরুণরাই নয় বরং সব বয়সিরাই মানসম্মত বেল্ট কিনে থাকে। বিশেষ করে জিন্সের কদরের সঙ্গে বেল্টের একটি সম্পর্ক রয়েছে। যেহেতু এখন মানুষ জিন্সের প্যান্ট বেশি পরে তাই উন্নতমানের বেল্টও বেশি চলে। তবে বেল্ট কেনার ক্ষেত্রে তরুণ ও বয়স্কদের মধ্যে যে পার্থক্যটি রয়েছে তা হলো তরুণরা শুধু বেল্টের অংশই নয় বরং এর বোকলেসকেও গুরুত্ব দেয়। একটি ভালো বোকলেস বেল্টের সৌন্দর্যকে অকেন গুণ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু বয়স্করা এখনো সাধারণ বেল্টই বেশি কিনে থাকেন।'