বিডিআর বিদ্রোহ :বিস্ফোরক আইনের মামলা পরিচালনায় ২০ বিশেষ পিপি

প্রকাশ | ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
পনের বছর আগে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা পরিচালনায় ২০ জন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ রোববার এ বিষয়ে আদেশ জারি করেছে। নিয়োগ পাওয়া বিশেষ পিপিরা হলেন- মো. বোরহান উদ্দিন, ফরহাদ নিয়ন, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, মোসাম্মৎ রোভানা নাসরিন শেফালী, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী, মো. শফিউল বশর সজল, গোলাম মোক্তাদির উজ্জ্বল, হান্নান ভূঁইয়া, মো. আব্দুল লতিফ, মো. মেহেদী হাসান জুয়েল, গাজী মাশকুরুল আলম সৌরভ, মো. হেলাল উদ্দিন, মো. জিলস্নুর রহমান, মাহফুজার রহমান ইলিয়াস, মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী, মো. মেহেবুব হোসেন, মো. মিজানুর রহমান শিহাব, মো. খুরশিদ আলম ও আজগর হোছাইন। তাদের মধ্যে বোরহান উদ্দিন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফরহাদ নিয়ন ও জাকির হোসেন ভূঁইয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাকিরা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পদমর্যাদার সুযোগ-সুবিধা পাবেন। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলার ১৭ জন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) নিয়োগ বাতিল করা হয়। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি। বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকান্ডের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছেন ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের। হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃতু্যদন্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরও ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন। হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়। অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে এই মামলার বিচার ঝুলে যায়। ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্র্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের সময় সংঘটিত হত্যাকান্ডের পুনঃতদন্ত কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে। সোমবার সকালে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, 'বিডিআর হত্যাকান্ডের পুনঃতদন্ত হবে এবং অবশ্যই হতে হবে। দ্রম্নতই তদন্ত টিম করা হবে। যেহেতু অন্যান্য অনেকগুলো হচ্ছে, এটাও হয়ে যাবে।' সেই বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।