লক্ষ্যমাত্রার বেশি ধান কিনতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ

প্রকাশ | ২১ মে ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২১ মে ২০১৯, ০০:২০

যাযাদি রিপোর্ট
কৃষকদের বাঁচাতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মন্ত্রণালয়কে বেশি ধান কেনার ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। একই সঙ্গে কমিটি সরকারি-বেসরকারি, যেকোনো পর্যায়ে চাল আমদানি বন্ধের পাশাপাশি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে চাল কেনা এবং মধ্যসত্তভোগীরা যাতে কোনো সুযোগ না পায় সে জন্য কঠোর নজরদারি রাখতে বলেছে। সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম বলেন, 'এবার উৎপাদন বেশি হয়েছে। আমরা এজন্য সরকারকে বলেছি, যে দেড় লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার চেয়ে যাতে বেশি কেনা হয়।' সরকার ধান-চাল ক্রয়ের জন্য ২৫ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করলেও জেলায় ক্রয় অভিযান এখনো শুরু হয়নি। সরকারিভাবে এবার প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা এবং প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকায় কিনবে সরকার। চলতি বোরো মৌসুমে সরকারের ১০ লাখ টন সেদ্ধ বোরো চাল কেনার লক্ষ্য রয়েছে। এছাড়া ৩৫ টাকা কেজি দরে আরও দেড় লাখ টন বোরোর আতপ চাল, ২৬ টাকা কেজিতে দেড় লাখ টন বোরো ধান এবং ২৮ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কিনবে সরকার। সরকারি ধান-চাল ক্রয় এখনো শুরু না হওয়ায় ফড়িয়ারা ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে ধান কিনছে; ফলে কৃষকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। সরকার প্রতি মণ বোরো ধান ১০৪০ টাকায় কিনলেও কৃষক পাচ্ছে তার চেয়ে অনেক কম। মজুদ তলানিতে ঠেকে যাওয়ার পর এখন চাল আমদানি বাড়াচ্ছে সরকার; চাল আসছে ভারত থেকেও এখন বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, যেখানে ধান কাটার একজন শ্রমিককে দিতে হয় তার চেয়ে বেশি টাকা। ধানের দাম নিয়ে অসন্তোষ থেকে পাকা ক্ষেতে কৃষকের আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নাসিম বলেন, 'কমিটি ভর্তুকি দিয়ে হলেও চাল রপ্তানি করার সুপারিশ করেছে। কমিটি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য বলেছে, যাতে মধ্যসত্তভোগীরা কোনো সুযোগ না পায়।' বৈঠকের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, সারাদেশে ২০০টি পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন 'প্যাডি সাইলো' নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে সরকার। তিনি বলেন, 'সরকার ১৪ শতাংশ আর্দ্রতা সম্পন্ন ধান কিনছে। যে কারণে অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে চাতাল মালিকদের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করছে। প্যাডি সাইলো নির্মাণ করা হলে কৃষক সেখানে নিজের ধান শুকিয়ে বিক্রি করতে পারবে।' আগামী এক মাসের মধ্যে এ প্রকল্পের জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। মন্ত্রী আরও বলেন, ধান যাতে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কেনা হয় তা তদারকির জন্য ২০টি মনিটরিং টিম কাজ করবে। তারা কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করবে। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে ভেজালবিরোধী অভিযান সারা বছর অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম শক্তিশালী করতে লোকবল বৃদ্ধি এবং প্রতিটি জেলায় এর কার্যক্রম সম্প্রসারণের সুপারিশও করা হয়। মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ছাড়াও ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, আয়েন উদ্দিন এবং আতাউর রহমান খান অংশ নেন।