সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না
প্রকাশ | ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিশেষ প্রতিনিধি
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না, তা সে যত প্রতাপশালীই হোক না কেন। এ ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না। অপরাধী সে যে দলেরই হোক তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বুধবার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'সভায় মূলত ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো হয়েছে, তবে আরও উন্নতি ঘটানোর সুযোগ রয়েছে। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।'
তিনি বলেন, 'মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে সফল হয়েছে, সে মডেল রাজধানীর অন্য এলাকায় প্রয়োগ করে ঢাকা শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটানো হবে।'
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে অন্যতম সমস্যা হলো রাস্তার ওপর অবৈধ দোকানপাট বসা। এগুলো উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকার যানজট নিরসনে আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে প্রধান সড়কগুলোতে প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলে আসা। তারা যেন চার্জিং পয়েন্টগুলোর মাধ্যমে ব্যাটারিচালিত রিকশায় চার্জ দিতে না পারে, সে বিষয়ে বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
সভায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় বিধান; গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো; চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ; দখলবাজি, বিশেষ করে মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড/ট্রাকস্ট্যান্ড এবং যাত্রাবাড়ি, কারওয়ান বাজার, কাপ্তান বাজারসহ ভাসমান বাজারগুলোতে চাঁদাবাজি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ; মাদকের স্পট চিহ্নিত করে মাদকবিরোধী অভিযান ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার; মব জাস্টিস প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ; জেনেভা ক্যাম্প, বিভিন্ন বস্তিসহ অপরাধপ্রবণ এলাকা সিসিটিভি স্যার্ভিলেন্সের আওতায় আনা; যে কোনো জনসভা আয়োজনের ক্ষেত্রে ডিএমপির অনুমতি নিশ্চিতসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন,র্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের র্(যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান এনডিসি, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মরত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রকল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ
এদিকে এর আগে গত ৪ নভেম্বর (সোমবার) বাংলাদেশ ছাত্রকল্যাণ ট্রাস্টের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। ছাত্রকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা প্রফেসর মো. মঈন উদ্দিন খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ছাত্রকল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক প্রিন্সিপাল নুরে আলম তালুকদার, ছাত্রকল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী দলের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্রকল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালক আরিফুল ইসলাম জিয়া, বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের মহাসচিব ও বাংলাদেশ ছাত্রকল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য মো. ফারুক হাসান, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য মো. তারেক এবং ছাত্রকল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালক মুসতাকিমা ইসলাম মীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধি দল উপদেষ্টাকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের তাগিদ দেন এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে যথাযথ শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের পেশাগত উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।