ভাঙচুর-আন্দোলনের জের

গাজীপুরে বন্ধ ঘোষিত তুসুকা গ্রম্নপের ২৩৯ শ্রমিক ছাঁটাই

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় বন্ধ ঘোষিত তুসুকা গ্রম্নপের ৬ কারখানার ২৩৯ জন শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ছাঁটাই করা শ্রমিকদের নামের তালিকা কারখানার প্রধান ফটকে লাগিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক আন্দোলন ও কারখানা ভাঙচুরের কারণে এক সপ্তাহ আগে তুসুকা গ্রম্নপের ওই কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শ্রমিকরা ধারণা করছেন, ওই ঘটনার জেরে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেতে পারে। কারখানার শ্রমিক মনির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, 'অনেক শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। এ খবর শুনে বৃহস্পতিবার সকালে কারখানার গেটে গিয়ে দেখি আমার নামও তালিকায় আছে। আমার কি দোষ তাও আমি জানি না। যেদিন সকালে আন্দোলন হয়েছে ওইদিন আমার ডিউটি ছিল রাতে। আমি ওই আন্দোলনে জড়িত নই। ওইদিন অন্য কারখানার পোলাপান গিয়ে হাঙ্গামা করেছে আর চাকরি গেল আমার। এখন নতুন করে কোথায় যাবো, কোথায় কাজ খুঁজবো সেটাই বুঝতাছি না।' কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশ জানায়, গত ২ নভেম্বর শ্রমিক আন্দোলনের কারণে ৩ নভেম্বর থেকে কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গ্রম্নপের তুসুকা জিন্স লিমিটেড, তুসুকা ট্রাউজার্স লিমিটেড, তুসুকা প্রসেসিং লিমিটেড, তুসুকা প্যাকেজিং লিমিটেড, তুসুকা ডেনিম লিমিটেড এবং তুসুকা ওয়াশিং লিমিটেডসহ ৬টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর কারখানায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগে ২৩৯ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। শ্রমিক ছাঁটাইয়ে খবর পেয়ে সকাল থেকে আশপাশের পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা কারখানার সামনে ভিড় করেন। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা যায়। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক ফেরদৌসী আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, 'কারখানায় হামলা ভাঙচুর হয়ে থাকলে আমাদের কি দোষ। আমরা চাকরি ফিরে চাই। আমরা কাজ করতে চাই। কোনো ঝামেলা চাই না।' তুসুকা ট্রাউজার লিমিটেড কারখানার অপারেটর ওমর আলী বলেন, 'আমার কোনো অপরাধ নাই তারপরও আমাকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এখন আবার নতুন করে চাকরি খুঁজতে হবে।' শ্রমিক বিলস্নাল হোসেন বলেন, 'কারখানা বন্ধ আছে এর মধ্যে বুধবার রাত ৮টার দিকে মোবাইলে মেসেজ আসে- মো. বিলস্নাল ৬ নভেম্বর থেকে আপনার চাকরির অবসান করা হলো। আপনার সমুদয় পাওনাদি কারখানার হিসাব শাখা হতে দেওয়া হবে।' তুসুকা গ্রম্নপের পরিচালক তারেক হাসান বলেন, 'শ্রম আইনের বিধি মোতাবেক ২৩৯ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাদের পাওনাদি শ্রম আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হবে। কারখানায় মারামারি ও ভাঙচুরের অভিযোগে তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে।' গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, 'শ্রমিক ছাঁটাইয়ের খবর পেয়ে কোনাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।'