বালিশ দুর্নীতি: দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি টিআইবির

প্রকাশ | ২৩ মে ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২৩ মে ২০১৯, ০০:১৭

যাযাদি রিপোর্ট
রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসিক ভবনের কেনাকাটায় অভূতপূর্ব মাত্রায় অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি এই প্রকল্পের সর্বাঙ্গীণ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই প্রকল্প নিয়ে নানামুখী বিতর্ক থাকার পরও তা সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। কিন্তু শুরুতেই ক্ষুদ্র একটি অংশে যে ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাকে আমরা এই প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে মনে করি। এই বিদু্যৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সেখানে মাত্র ২৫ কোটি টাকা খরচের ক্ষেত্রেই যে ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে শঙ্কিত হতেই হয়। তিনি বলেন, প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী যদিও অনিয়মের মাত্রা সাগরচুরি সম, এ ধরনের সরকারি প্রকল্পে সরকারি কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে দুর্নীতির অভিযোগ বাংলাদেশে এই প্রথম নয়। তারপরও এই অনিয়মের দায় কোনো মন্ত্রণালয়ের সেই বিতর্কে সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ জড়িয়েছেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো কর্মকর্তা আবার একে দুর্নীতি বলে মানতে নারাজ এমন তথ্যও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আমরা আরও বেশি শঙ্কিত, কারণ দুর্নীতি দমন কমিশনও 'ধীরে চলো' নীতি ঘোষণা করেছে, প্রকল্পটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং বিভাগীয় তদন্ত চলছে- এই যুক্তিতে। প্রকল্পটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই কারণেই শুরুতেই সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে সতর্কবার্তা প্রদান করতে হবে যেন 'বালিশ-কেটলির' উপাখ্যান পুরো প্রকল্পে সম্ভাব্য অনিয়মের 'হিমশৈলের চূড়া (ঃরঢ় ড়ভ :যব রপবনবৎম) হিসেবে প্রতীয়মান না হয়।' ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শুরুতেই যে সতর্কবার্তা আমরা পাচ্ছি তাতে প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সরকারের আরও দৃঢ় অবস্থান নেয়া জরুরি। কারণ রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া, এর বাস্তবায়নের দায়িত্বও তাদের হাতে। আর আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশসমূহের একটি এবং সে দেশের সরকার ও সরকারের যোগসাজশপুষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ধার ধারে না। তাই এই প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য এখন থেকেই সর্বোচ্চ সচেষ্ট হতে হবে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স' নীতির যথাযথ প্রতিফলনের দাবি জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।