হালদায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সংগৃহীত ডিম
এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। শনিবার ভোর থেকে ডিম আহরণকারীরা ডিম সংগ্রহ করছেন। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে বজ্রসহ প্রবল বর্ষণ শুরু হলে ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে নদীর পাড়ে অবস্থান নেন ডিম আহরণকারীরা। বর্ষণের ফলে হালদার সঙ্গে সংযুক্ত খাল, ছরা ও নদীতে ঢলের সৃষ্টি হয়। সাধারণত চৈত্র ও বৈশাখ মাসে প্রবল বর্ষণ হলে মা মাছ ডিম ছাড়ে। কিন্তু এবার বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকায় ঢলের প্রকোপ হয়নি। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝিতে নদীতে মা মাছ নগণ্য পরিমাণ ডিম ছেড়েছিল। মা মাছ সাধারণত অমাবস্যা, অষ্টমী ও পূর্ণিমা তিথিতে নদীতে ডিম ছাড়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত অভিযান চালিয়ে মা মাছ সংরক্ষণ, ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়া সংস্কার, কুয়ায় নিরবচ্ছিন্ন াম ৭ বিদু্যৎ সরবরাহের ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগের কারণে হালদায় ডিম সংগ্রহের পরিমাণ এবার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। হালদা থেকে ২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়। হালদার ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর জানান, 'বেশ কয়েক বছরের খরা কাটিয়ে গত বছর আমরা ভালো ডিম সংগ্রহ করেছিলাম। তবে ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়া স্বল্পতার কারণে অনেক ডিম নষ্ট হয়। যার কারণে ভালো ডিম সংগ্রহ করেও লাভ হয়নি। এবার হালদার মা মাছ রক্ষায় গত কয়েক মাসে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। মাছের ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়াগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলেদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে এবার রেকর্ড ডিম সংগ্রহে আমরা আশাবাদী।' হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন জানান, 'দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা। এটি আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ কারণে ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই হালদাকে গুরুত্ব দিয়ে নানা উদ্যোগ নিই।' তিনি বলেন, 'ডিম সংগ্রহকারীরা যাতে ভালো ডিম সংগ্রহ করতে পারেন এ জন্য মা মাছ সংরক্ষণের ওপর জোর দিই। ইঞ্জিনচালিত নৌকা জব্দ, নিষিদ্ধ জাল ধ্বংসসহ হালদার দূষণ কমাতে নিয়মিত অভিযান চালাই। ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়াগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিই। নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যতের ব্যবস্থা করি।' মো. রুহুল আমিন বলেন, 'মাছুয়া ঝর্ণা, শাহ মাদারি এবং মদুনা ঘাটসহ ৩টি হ্যাচারির ১০৮টি কংক্রিট ও ১০টি পস্নাস্টিকের কুয়ায় হালদার ডিম সংরক্ষণের ব্যবস্থা ছিল। তবে প্রায় ৫ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে এসব কুয়ার ৪৫টি নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট হওয়া কুয়াগুলো সংস্কার করেছি আমরা। জেলেদের বলেছি- প্রয়োজন হলে আরও কুয়া তৈরি করে দেবে উপজেলা প্রশাসন। হালদায় জেলেদের ডিম সংগ্রহে সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে চাই আমরা।'