গভীর রাতে রাজশাহী মেডিকেলের ছাত্রীনিবাসে বহিরাগত

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের একটি ছাত্রীনিবাসে শনিবার ভোর রাতে একজন বহিরাগত ঢুকে পড়েন। এতে ছাত্রীনিবাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ওই ব্যক্তিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। আর কলেজ কর্তৃপক্ষ দায়িত্বে অবহেলার কারণে এক নিরাপত্তাকর্মীকে বরখাস্ত করেছে। ছাত্রীনিবাসে ঢুকে পড়া ব্যক্তির নাম আবদুল হামিদ (৬০)। তার বাড়ি রাজশাহী নগরের কাশিয়াডাঙ্গা মিঞাপাড়া এলাকায়। বরখাস্ত হওয়া নিরাপত্তাকর্মীর নাম হাসিবুল হাসান। তিনি দাবি করেছেন, ওই সময় তিনি বাথরুমে ছিলেন। সেই সুযোগে লোকটি ভেতরে ঢুকেছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পলিন ছাত্রীনিবাসে এই ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রীনিবাসের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, সাহরি খাওয়ার পরে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। এমন সময় নিরাপত্তাকর্মীর দায়িত্বে অবহেলার সুযোগে এক লোক ছাত্রীনিবাসের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ঢুকে পড়েন। টের পেয়ে মেয়েরা চিৎকার শুরু করেন। তারা তাদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে লোকটিকে কক্ষের ভেতরে আটকে দেন। পরে বস্নকের অন্য মেয়েরা গিয়ে লোকটিকে ধরে ফেলেন। তারা নিচের কলাপসিবল গেটও বন্ধ করে দেন। পরে ছাত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ককে খবর দেয়া হলে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। এ সময় ছাত্রীনিবাসের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা লোকটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন এবং তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য মেয়েদের অনুরোধ করেন। মেয়েদের অভিযোগ, বহিরাগত লোকটিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি মেয়েদের হুমকি দিচ্ছিলেন। এই ছাত্রীনিবাসে নূ্যনতম নিরাপত্তাও নেই। তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। গভীর রাতে একজন বহিরাগত কীভাবে সব নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে ছাত্রীনিবাসের দোতলায় উঠে যেতে পারেন, এটা ভাবলেও ভয়ে তাদের গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী বলেন, এ ঘটনার পর মেয়েরা তার কাছে এসেছিলেন। তিনি ছাত্রীনিবাস পরিচালনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীকে বরখাস্ত করেছেন। নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, যে লোকটি ওখানে ঢুকেছিলেন, তিনি আসলে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। তার পরিবারের লোকজন তাকে তিন দিন ধরে খুঁজছিলেন। তারা মানসিক হাসপাতালে ভর্তির কাগজপত্র নিয়ে এসেছিলেন। তাকে তিনবার সেখানে ভর্তি করা হয়েছিল। কোনো মামলা দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'পাগলের নামে তো কোনো মামলা হয় না। তিনি ইতিমধ্যেই হাজতখানা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন।' থানায় আটক আবদুল হামিদ বলছেন, তার জামা হারিয়ে গেছে, সেই জামা খুঁজতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ১০০ মেয়ে তাকে ঘিরে ধরেছিলেন। মেয়েরা তাকে মেরেছেন। বিকেলে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আবদুল হামিদ থানায় আটক ছিলেন।