ঝালকাঠির সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান

আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই বিভক্ত দেখতে চাই না

প্রকাশ | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সোমবার ঝালকাঠির পূর্ব চাঁদকাঠিতে জেলা জামায়াতের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন -সংগৃহীত
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এ দেশ কারও একার নয়, দেশ সবার। এ দেশের মানুষ গত ১৫ বছরে অনেক জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই, আর বিভক্ত দেখতে চাই না। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সোমবার সকালে ঝালকাঠি শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি এলাকায় ইউনিয়ন দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা জামায়াতে ইসলামী এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, 'আওয়ামী লীগ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে ও কারাগারে রেখে তিলে তিলে হত্যা করেছে। কিন্তু তাদের সেই অত্যাচার-নির্যাতনের জবাব জুলাই-আগস্টের গণ-অভু্যত্থানের মধ্য দিয়ে শান্তিকামী ছাত্র-জনতা দিয়েছে। আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা এখনো দেশকে অস্থিতিশীল করতে উসকানি দিচ্ছে। তবে সেই ফাঁদে কোনোভাবেই পা দেওয়া যাবে না। যতই ষড়যন্ত্র হোক, তা ব্যর্থ করতে হবে।' জামায়াতের আমির বলেন, 'আমাদের সন্তানরা রাস্তায় নেমে বলেছিল, 'উই ওয়ান্ট জাস্টিজ', 'বৈষম্য চাই না, সুবিচার চাই', 'বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই', 'দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই'। আমরাও এমন একটা বাংলাদেশ চাচ্ছি। সম্মানের বাংলাদেশ গড়তে চাই। সামাজিক নিরাপত্তা গড়তে চাই। সবাই মিলে প্রিয় বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে নিতে চাই।' বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড সম্পর্কে শফিকুর রহমান বলেন, 'দেশে খুন, ক্রসফায়ার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে ভরে গিয়েছিল। বহু মায়ের বুক খালি করা হয়েছে। বাবার সামনে থেকে তার সন্তানকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে। বিচারের নামে বিচারক হত্যাকান্ড সংগঠিত করা হয়েছে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত যাদের অন্যায়ভাবে খুন করা হয়েছে, আলস্নাহ তাদের সবাইকে শহীদের স্বীকৃতি দিন এবং তাদের ওপর সন্তুষ্ট হোন।' ডা. শফিকুর রহমান বলেন, 'জামায়াত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে কাউকে অধিকার ভিক্ষা করতে হবে না। সবাইকে তার অধিকার সম্মানের সঙ্গে দেওয়া হবে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে কোর্ট-কাচারি, অফিস-আদালতে কোথাও গিয়ে আপনি লাঞ্ছিত হবেন না। কৃষক তার ফসলের নায্য দাম পাবেন, শ্রমিক পাবেন তার ঘামের মজুরি।' ইসকন ইসু্যতে জামায়াতের আমির বলেন, 'একটি উগ্র গোষ্ঠী বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যা করেছে। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে। কিন্তু এ দেশের দায়িত্বশীল মুসলমানরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেয়নি। আমরা ধৈর্য্য ধরেছি, দেশের মানুষকে শান্ত করেছি। এ দেশে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ- খ্রিষ্টান- সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিতে বসবাস করবে। কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় কাউকে পাহারা দিতে হবে না।' দ্বিতীয় স্বাধীনতা প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, 'আবু সাঈদ আমাদের এই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান আইকন ও সেনাপতি। তিনি অধিকার চেয়েছিলেন, কিন্তু তাকে পরপর তিনটি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তাকে স্যালুট জানাই।' সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন- জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, জামায়াত নেতা মাসুদ সাঈদী প্রমুখ। সমাবেশে বরিশাল বিভাগের জেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।