ছেলেদের ঈদ পোশাকে সুতি জামা, টি-শার্টের কদর

প্রকাশ | ২৭ মে ২০১৯, ০০:০০

এস এম মামুন হোসেন
তরুণদের পছন্দের তালিকায় সবসময়ই শীর্ষে থাকে টি-শার্ট, ঈদেও তার ব্যতিক্রম হয় না। আরামদায়ক ও বিভিন্ন রঙ-বেরঙের টি-শার্টের খোঁজে ভিড় জমাচ্ছেন বিপণিবিতানগুলোতে। ছবিটি রোববার এলিফ্যান্ট রোড থেকে তোলা -আমিনুল ইসলাম শাহীন
এবারের ঈদের বাজারে ছেলেদের জন্য এসেছে নানা রংঢঙের সব শার্ট আর পোল গেঞ্জি। চোখ জুড়ানো রঙের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের নকশাও ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। ফ্যাশন সচেতন তরুণরা স্টাইলিশ এসব শার্ট ও পোল গেঞ্জির দিকে ঝুঁকেছে। তবে সাধারণ ক্রেতাদের কদর সুতির জামা ও টি-শার্টে। এবারের ঈদ বাজারে ছেলেদের জন্য দুই ধরনের শার্ট বিক্রি হচ্ছে মার্কেটগুলোতে। এর একটি হাফ হাতা এবং অন্যটি ফুলহাতা। গরমের জন্য হাতা খাটোটির বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে লম্বাটিও কিনছেন অনেকে। লিলেন কাপড়ের নরম আরামদায়ক কাপড়ের শার্টের অধিকাংশই ফুল হাতা। এ শার্টটি এবারের ঈদের বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানালেন, তীব্র গরমের কারণে মানুষ আরামদায়ক ও দেখায় সুন্দর এ শার্টটি বেশি পছন্দ করছে। তবে সুতি কাপড়ের শার্টই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। রঙের মধ্যে সাদা, সবুজ, খয়েরিসহ বিভিন্ন রঙের মিশেলে তৈরি শার্ট রয়েছে। ক্রেতারা নিজেদের পছন্দমতো সেসব কিনছেন। আবার পোল গেঞ্জির মধ্যে রয়েছে- লাল, সাদা, বাদামি, খয়েরি, ছাইসহ বিভিন্ন রঙের বাহার। কিছু গেঞ্জির হাতা ও গলার কাছে রাবারসদৃশ কলারওয়ালা গেঞ্জি যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে কোনো কলার ছাড়াই শুধু সেলাই করা গেঞ্জিও। যারা রাবারসদৃশ কলার পছন্দ করেন না তারা সমান গেঞ্জিই কিনছেন। তবে কলারওয়ালা গেঞ্জির চেয়ে কলার ছাড়াটিই দেখতে সুন্দর বলে জানালেন কয়েকজন। এ কারণে বিক্রিতেও তার প্রভাব রয়েছে। এর পাশাপাশি পাতলা ফতুয়াও চলছে বেশ। দামের দিক দিয়ে এসব শার্ট আর গেঞ্জির রয়েছে ভিন্নতা। কিছু শার্টের দাম মাত্র দুই থেকে তিনশ টাকা। আবার কিছু শার্টের দাম চার থেকে পাঁচ হাজার টাকাও রয়েছে। সুতি কাপড়ের শার্টের দাম তুলনামূলক কম। তবে লিলেনসহ উন্নতমানের কাপড়ের তৈরি শার্টের দাম সবচেয়ে বেশি। বিক্রেতারা জানালেন বাইরে থেকে আমদানি করা এসব শার্ট অনেক উন্নত মানের। তাই দামও একটু বেশি। তবে ক্রেতারা কেনার ক্ষেত্রে এক থেকে দেড় হাজার টাকার শার্টকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। অন্যদিকে পোল গেঞ্জিরও দামের ক্ষেত্রে শার্টের মতোই ভিন্নতা রয়েছে। কম দাম থেকে শুরু করে বেশি দামেও পাওয়া যাচ্ছে এসব গেঞ্জি। তবে বিদেশি কিছু গেঞ্জি সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু কেনার ক্ষেত্রে এখানেও শার্টের মতোই মধ্যম মানের দামের গেঞ্জিই বেশি পছন্দ করছেন ক্রেতারা। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি মার্কেটেই এখন বিভিন্ন ধরনের শার্ট আর পোল গেঞ্জি পাওয়া যাচ্ছে। মধ্যম মানের দামের শার্ট-গেঞ্জি ক্রয়ের জন্য মানুষের প্রথম গন্তব্য রাজধানীর নিউ মার্কেট ও আর আশপাশের মার্কেটগুলো। তবে ভিআইপিরা আরও একটু ভালো মানের পোশাকের আশায় বসুন্ধরা সিটি, এলিফ্যান্ট রোড, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন নামকরা মার্কেটেই ছুটছেন। বসুন্ধরা সিটির দুই ও তিনতলাতে ছেলেদের জন্য উন্নত মানের শার্ট ও পোল গেঞ্জি পাওয়া যাচ্ছে। এ মার্কেটে সর্বনিম্ন আটশ' থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব শার্ট। আবার ছেলেদের কাপড়ের আরেক বড় মার্কেট শাহবাগের আজিজ সুপারে গিয়ে দেখা যায় একটু কম দামে কিন্তু খুবই ভালো মানের সব স্টাইলিস শার্ট এবং মধ্যম মানের হাতার গেঞ্জি পাওয়া যাচ্ছে। এখানে দাম চারশ' থেকে শুরু করে আড়াই হাজার টাকা। আজিজ সুপারের মেঘ ফ্যাশন হাউসে গিয়ে দেখা যায়, স্টলটিতে অনেক সুন্দর শার্ট ও পোল গেঞ্জি রয়েছে। এর ম্যানেজার মো. সুমন বলেন, 'ঈদ উপলক্ষে আমরা অনেক সুন্দর ডিজাইন, রং ও মানের শার্ট এবং গেঞ্জি বাজারে এনেছি। ক্রেতারাও এগুলো পছন্দ করছেন। ভালোই বিক্রি হচ্ছে। এখনকার ছেলেরা অনেক ফ্যাশনেবল জিনিস পছন্দ করে থাকে। তাদের পছন্দমতো আয়োজন করতে চেষ্টা করেছি। দামের ক্ষেত্রে খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না। মানুষ কিনছে। ফলে বলতে পারি দাম ঠিক আছে বলেই মানুষ নিচ্ছে।' এ দোকানে আসা একজন ক্রেতা হাবিবুলস্না বলেন, 'কাপড়ের ব্যাপক কালেকশন আছে। মানও ভালো। তবে দাম অনেক বেশি। দাম আরও কম হওয়া উচিত। এত দাম দিয়ে এগুলো কেনা খুবই কষ্টসাধ্য। কারণ একটি শার্ট কিনতে যদি তিন হাজার টাকা খরচ করতে হয় তবে অন্য আরও জিনিসের প্রয়োজনওতো রয়েছে। সবমিলেতো একজনের কেনাকাটাতেই দশ হাজার টাকা প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশে এমন সাধ্যওয়ালা মানুষ কতজন আছে?' ু