শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৬ জুলাই ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮, ০০:১৯

যাযাদি রিপোটর্
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার তার কাযার্লয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীের্দর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী স্বণর্পদক বিতরণ করেন Ñবাসস

উন্নয়নশীল দেশের মযার্দা ধরে রাখতে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলায় গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার ২০১৭ সালের প্রধানমন্ত্রী স্বণর্পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা যে স্বীকৃতি পেযেছি; এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। এই শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।’ প্রধানমন্ত্রী কাযার্লয়ের আন্তজাির্তক সম্মেলনকেন্দ্রে সকালে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬৩ জনকে স্বণর্পদক দেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭ সালের প্রধানমন্ত্রী স্বণর্পদক পাওয়া শিক্ষাথীের্দর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যাব, পিছিয়ে যাব না। ভবিষ্যতেও যেন পিছিয়ে না থাকি। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মাথা উঁচু করে চলতে হবে। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা কারও কাছে হাত পেতে চলব না।’ এবার ১৬৩ জনের মধ্যে ১০১ জন ছাত্রী প্রধানমন্ত্রী স্বণর্পদক পেয়েছেন। বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ছেলেদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগ দিতে হবে। আমি চাই, সমান সমান থাকুক। পরিবারের মেয়ে সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের মনোভাব পরিবতের্নর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লেখাপড়া শিখে মেয়েরা পরের ঘরে চলে যাবে; এই মনোভাবের পরিবতর্ন হয়েছে।’ ২০১০ সালে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাস করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বতর্মানে দেশে ৪৬টি পাবলিক ও ১০৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৯টি।’ উচ্চশিক্ষার প্রসারে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ছয়টি এবং ২০০৯ সাল থেকে এ পযর্ন্ত ১৩টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি কৃষি এবং ৯টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের সব বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গবেষণায় গুরুত্ব দেই। গবেষণা ছাড়া অগ্রগতি সম্ভব নয়।’ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মানসমৃদ্ধ করা এবং তাদের তদারকি, নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য ‘উচ্চশিক্ষা কমিশন’ প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ পযাের্য় থাকার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মঞ্জুরি কমিশন এখন যে আকারে রয়েছে, সে আকারে এতগুলো প্রতিষ্ঠান দেখা সম্ভব নয়।’ ‘উচ্চ শিক্ষা কমিশন হবে একটি স্বায়ত্তশাসিত স্ট্যাটিউটরি বডি, যার দায়িত্ব হবে শিক্ষা এবং গবেষণার মানকে উন্নত করা। যাতে স্নাতকরা বিশ্বের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতকদের সমপযাের্য় উন্নীত হতে পারে।’ বাংলাদেশের চেয়ে অন্য যেকোনো দেশের উচ্চ শিক্ষা ব্যয়বহুল হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদিও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এর খরচের শতভাগের মধ্যে ৯০ ভাগই... বলতে গেলে, ৯০ ভাগ কেন শতভাগেরও বেশি খরচ সরকার থেকেই করি। শিক্ষার খরচটা আমি খরচ হিসাবে দেখি না। আমি মনে করি, এটা একটি বিনিয়োগ। কারণ, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য দিল আফরোজ বেগম। পদকপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে অনুভ‚তি ব্যক্ত করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাত জাহান পিয়া এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তপন ধর। জামার্ন রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছেন জামার্ন রাষ্ট্রদূত টমাস হেইনরিখ প্রিঞ্জ। জামার্ন দূত বুধবার প্রধানমন্ত্রী কাযার্লয়ে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশ ও জামাির্নর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পকের্ সন্তোষ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন বছর অবস্থানকালে প্রিঞ্জের কাজের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। ই-পাসপোটর্ তৈরিতে জামার্ন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের। ই-পাসপোটের্র কাজ দ্রæত শেষ করার বিষয়েও জামাির্নর বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে অবস্থানকালে সরকারের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান প্রিঞ্জ। বাংলাদেশের আথর্-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসাও করেন বিদায়ী রাষ্ট্রদূত।