থার্টি ফাস্ট নাইট সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়কে ঘিরে সৈকতে পর্যটকের ঢল

প্রকাশ | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

জাবেদ আবেদীন শাহীন, কক্সবাজার
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড় -যাযাদি
পুরনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। সমুদ্র সৈকতে শীতের ছোঁয়ায় রাতের মৌনতার মাঝে পরিবার বা বন্ধুদের সাথে নতুন বছরের পরিকল্পনা আর পুরনো বছরের স্মৃতি রোমন্থন করা মহাআনন্দের। আজ চলতি বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে এবং ২০২৫ সালকে স্বাগত জানাতে পর্যটকেরা সৈকতে আনন্দে মেতে উঠবেন। এ বছর সৈকতে উন্মুক্ত স্থানে প্রশাসনের কোনো অনুষ্ঠান পরিকল্পনা নেই। ফলে সৈকতের বিভিন্ন খোলা স্থানে অনুষ্ঠান, আতশবাজি ও কনসার্ট বন্ধ থাকবে। তবে তারকামানের হোটেলগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনডোর প্রোগ্রামের আয়োজন করছে। যেখানে অতিথিরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিশেষ ডিনারের মাধ্যমে থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপন করতে পারবেন। হোটেলের অতিথি, বিদেশি পর্যটক এবং বিশেষ মেহমান ব্যতীত এসব অনুষ্ঠানে অন্যদের প্রবেশের সুযোগ নেই। এদিকে, থার্টিফার্স্ট নাইটকে ঘিরে কক্সবাজারে পর্যটকের চাপ বাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক পক্ষ আশা করছেন, এবার থার্টিফাস্ট উপলক্ষে কক্সবাজারে পাঁচ লাখেরও বেশি পর্যটক সমাগম হবে। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রতিবছর থার্টিফাস্ট নাইট উদ্‌?যাপন উপলক্ষে কক্সবাজার লোকারণ্য হয়ে ওঠে। এবারও বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে পাঁচ লাখের বেশি পর্যটক সমাগম হবে। উন্মুক্ত আয়োজন না থাকলেও মানুষের উপস্থিতি বাড়ছে এতে করে এখন পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাঝে চাঙ্গা ভাব ফিরেছে। সৈকতের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতের সবদিকে মানুষ আর মানুষ। এখানে এসে পর্যটকরা বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। বেশিরভাগ নারী-পুরুষ সমুদ্রের পানিতে নেমে গোসলে ব্যস্ত। অনেক পর্যটক বালুচরে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছেন, কেউ সৈকতে সাজানো ছাতায় বসে শীতল হাওয়া উপভোগ করছেন, কেউ জেট স্কিতে চড়ে ঘোরাঘুরি করছেন, কেউ ঘোড়া ও বিচ বাইক নিয়েও ছুটছেন। সৈকতে পর্যটকদের ছবি তুলে দিতে দায়িত্ব পালন করছেন তিন শতাধিক পেশাদার আলোকচিত্রী। সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, হিমছড়ি, দরিয়ানগর, পাটুয়ার টেক, ইনানী, রামু বৌদ্ধবিহারসহ দর্শনীয় স্থানগুলো পর্যটকে পূর্ণ। সমুদ্রে মানুষের আনাগোনা যত বাড়ছে ততই বাড়ছে লাইফগার্ড কর্মীদের তৎপরতা। সৈকতের এক পয়েন্ট থেকে অন্য পয়েন্টে ছুটে যাচ্ছেন তারা। হোটেল মালিক সূত্রে পাওয়া, শহরে পাঁচ শতাধিক হোটেল রিসোর্ট গেস্টহাউস কটেজের কোনো কক্ষ খালি নেই। বুকিং না দিয়ে চলে আসায় অনেকে এখন একটি কক্ষে গাদাগাদি করে পাঁচ-সাতজন করে থাকছেন। কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, 'এখন পর্যটন মওসুম, তার ওপর কয়েকদিন পরেই থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারে পর্যটকে ভরপুর। এবারে সব মিলিয়ে ৫ লাখের বেশি পর্যটক আসবে বলে মনে করছি।' \হকক্সবাজারে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা ঢাকার পর্যটক দম্পত্তি আবদুস সালাম ও শবনম মুশতারি জানান, প্রায় এক মাস আগে তারা হোটেল বুকিং করেছেন। প্রতিবারই এ সময়টা পরিবার নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের মারমেইড ইকো-টুরিজম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরী বলেন, 'তারকা শিল্পীদের নিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসব আয়োজন করছে মারমেইড কর্তৃপক্ষ। রিসোর্টের অতিথি ছাড়াও পর্যটকদের উৎসবে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, '৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে উন্মুক্ত অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তা ছাড়া আতশবাজি, পটকাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হোটেল-মোটেলসহ বিভিন্ন স্থানের বারও বন্ধ রাখা হবে।' টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, 'ভ্রমণে এসে কোনো পর্যটক যেন হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। টু্যরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে থাকবে, যাতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে সৈকতে ঘুরতে পারেন। বিশেষ করে থার্টিফাস্ট নাইটের দিন কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শহরের প্রতিটি মোড়ে তলস্নাশিও চালানো হবে।'