কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করতে চাই না -আমীর খসরু

প্রকাশ | ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

চট্টগ্রাম বু্যরো
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা দলীয়করণ করার বিপক্ষে। তারেক রহমানের নির্দেশ, আমরা কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করতে চাই না। বাংলাদেশটা ধ্বংস হয়ে গেছে দলীয়করণের কারণে। প্রত্যেকটি জায়গায় দলীয়করণ করতে করতে দেশ আজ এ জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। বুধবার দুপুরে নগরের মেহেদীবাগের বাসভবনে চট্টগ্রাম বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের উদ্যোগে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের আহবায়ক এস এম সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও ফোরামের পরিচালক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী রোকন উদ্দিন মাহমুদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উলস্নাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম চৌধুরী। ব্যবসায়ীদের হয়ে কে নেতৃত্ব দেবে তা নিজেদের মধ্যে ঠিক করতে হবে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, 'যখন আমি মন্ত্রী ছিলাম তখন কে কোথাকার, কোন চেম্বারের, কোন এসোসিয়েশনে কে হবে, সেসব মাথা ঘামায়নি। কারণ, এটা একেবারে উচিত না। আপনাদের নেতা আপনাদের নির্ধারণ করতে হবে। কে নেতৃত্ব দিবে সেটার সিদ্ধান্ত আপনাদের। সেখানে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আমরা (বিএনপি) চাইও না।' দেশের মানুষের মনোজগতের বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, তা ধারণ করতে হবে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'দেশটা শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে মানুষের মনোজগতের যে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি না। এই পরিবর্তনের সাথে যারা নিজেদের ধারণ করতে পারবে না, আগামী দিনে সে রাজনীতিবিদ হোক, আর যেই হোক তার কোনো ভবিষ্যৎ নেই দেশে। মানুষের প্রত্যাশা, আকাঙ্‌ক্ষা, ধারণা সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে গেছে। রাজনীতিও আগের মতো চলবে না।' ব্যবসায়ে নতুন ধারণা, সততা ও স্বচ্ছতা আনতে হবে জানিয়ে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু বলেন, 'আপনাদের (ব্যবসায়ী) ট্রেড বডিও চলবে না।এগুলোর মধ্যে নতুন ধারণা আনতে হবে। এখানে সততা আনতে হবে, স্বচ্ছতা আনতে হবে। মানুষ যাতে বাইরে থেকেও দেখতে পারে, ভেতর থেকেও দেখতে পারে। এরমধ্যে ঘোলাটে করার সুযোগ নেই। তাই এটা আমাদের সকলকে ধারণ করতে হবে।' দেশকে পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, 'পরিবর্তিত পরিস্থিতি দিয়ে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, এ সুযোগ যদি আমরা দেশকে পরিবর্তন করার জন্য এবার ব্যবহার করতে না পারি, তাহলে আমরা সকলে ডুবে যাব। রাজনীতিবিদরা ডুববে, দেশের জনগণ ডুববে, ব্যবসায়ীরা ডুববে, সিএনএফ এসোসিয়েশনও কাজ করতে পারবে না। তাই এ সুযোগটা নিতে হলে সবার মধ্যে সততা, স্বচ্ছতা, নতুন ভাবনা এবং নতুন চিন্তায় আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'দেশটা যেভাবে দলীয়করণ এবং লুটপাটের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সিএনএফ এসোসিয়েশন কিন্তু তার বাইরের কেউ না। শুধু যে চট্টগ্রাম সিএনএফ এসোসিয়েশন ধ্বংস হয়েছে তা নয়, দেশে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই এভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুক্ত করে সকলের জন্য একটি লেভেল পেস্নয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেওয়া। দল হিসেবে এ দায়িত্বটা পালন করছি। কে নেতৃত্বে যাবে, কোন দল যাবে, এসবের মধ্যে আমরা (বিএনপি) নেই। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করবো যাতে লেভেল পেস্নয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারি।' চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উলস্নাহ বলেন, 'বিগত দিনে যারা সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের দায়িত্বে ছিল তারা সিএন্ডএফকে খনি পেয়েছে মনে করতো। সেখানে তাদের যে সিন্ডিকেট আছে তা ভাঙতে হবে। সিএন্ডএফে সব তো ফ্যাসিবাদের ভোটার।তাদেরকে বাদ না দিলে নির্বাচনে গিয়ে কোন লাভ হবে না। এনবিআরের সংস্থার কমিটির কাছে তাদের অনিয়মের বিষয়ে জানাতে হবে। এই নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিতে হবে। নতুন করে কমিশন গঠন করতে হবে।' এছাড়া ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী শওকত আলী, আবু ছালেহ, এড. ওমর ফারুক, আবদুলস্নাহ আল মিলন, ওয়াহিদ মুরাদ, নুরুল হক, নুরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, আলী আহসান, আলমগীর সরকার, এনামুল হক চৌধুরী, এ এস এম ইসমাইল খান, মোরশেদুল আলম, শাহনেওয়াজ রুমি, তাজুল ইসলাম, গোলাম নবী, মো. আলমগীর, আবু তাহের, উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী ফোরামের জয়নাল আবেদীন জিয়া, হুমায়ুন কবির সোহেল, জামাল উদ্দিন বাবলু সহ বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ী।