৯০ দিনের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস
গাজীপুরে বন্ধ হয়ে গেছে ৪০ বছর আগের কারখানা
প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি
আগামী ৯০ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে গাজীপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পলিকন লিমিটেড নামের পস্নাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী একটি কারখানা। বৃহস্পতিবার সকালে সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী এলাকায় ওই কারখানার মূল ফটকে বন্ধ ঘোষণার নোটিশ টানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ডলার সংকট এবং বিগত এক বছরে কাঁচামাল আমদানি করতে ব্যর্থ হওয়ায় পলিকন কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কারখানার নির্বাহী পরিচালক ফয়সাল জহির স্বাক্ষরিত নোটিশে উলেস্নখ করা হয়, ডলার সংকট, বিগত এক বছরের অধিক কাঁচামাল আমদানি করতে ব্যর্থ এবং বিগত ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানার উৎপাদন ৮০ ভাগ কমে যায়। আগামী তিন মাসের (৯০ দিন) মধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী ধাপে ধাপে শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে।
নোটিশে আরও উলেস্নখ করা হয়, ব্যাংকের লোন, বকেয়া স্যালারি, গ্যাস বিল, বিদু্যৎ বিল কোনোটাই সঠিকভাবে বিগত আড়াই বছর যাবৎ শোধ করতে না পারায় আমাদের ৪০ বছরের প্রতিষ্ঠান বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
পলিকন লিমিটেডের কাটিং সেকশনের হেলপার সাইফুল ইসলাম বলেন, '১৭ বছর যাবৎ এই কারখানায় চাকরি করি। বুধবারও আমরা ডিউটি করেছি। সকালে অফিসের গেটে এসে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পাই। চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।'
কারখানার মেকানিক্যাল সেকশনের শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, '৩৭ বছর ধরে এই কারখানায় চাকরি করি। কারখানা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে দেওয়ায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রম্নয়ারি, নভেম্বর এবং ডিসেম্বরের মাসের বকেয়া বেতন না দিয়েই কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের পাওনা পরিশোধ করে বন্ধ ঘোষণা করতে পারত কর্তৃপক্ষ।'
পলিকন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ফয়সাল জহিরের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ না করায় এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর শিল্পপুলিশ-২-এর কোনাবাড়ী জোনের পরিদর্শক মোর্শেদ জামান বলেন, 'মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী রোববার (১২ জানুয়ারি) নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে তাদের সব বকেয়া পরিশোধ করা হবে। আমাদের শিল্পপুলিশ কারখানার সামনে অবস্থান করছে এবং পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।'