যবিপ্রবি শিক্ষার্থী সজীব

অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন তিনি দাবি সহপাঠীদের

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

যবিপ্রবি প্রতিনিধি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থী সজীব হোসেন বিশেষ উদ্দেশে অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তার সহপাঠীরা। তারা বলছেন ভাইরাল হতেই এমন কান্ড ঘটিয়েছেন সজীব। এদিকে, এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়, যেখানে তাকে প্রতারক ও ভন্ড বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন নেটিজেনরা। অন্যদিকে, নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর যশোর জেলা পুলিশ তাকে তার বন্ধুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে। পুলিশ বলছে, অপহরণ বা গুম নয়, ব্যক্তিগত কারণে বন্ধু নাজমুল হাসান রকির বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। বুধবার রাত ৯টার দিকে যশোর জেলা পুলিশ মিডিয়া সেল থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাকে উদ্ধার করার তথ্য জানানো হয়। সজীব হোসেন যবিপ্রবির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন, গত নভেম্বর মাসে তিনি পদত্যাগ করেন। এছাড়া তিনি যবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের পদ প্রত্যাশী ছিলেন বলেও জানা গেছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি রাত ৯টার পর থেকে সজীব হোসেনের নিখোঁজ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আমজাদ হোসেন যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। 'সজীবকে যবিপ্রবির ছাত্রদল নেতা' দাবি করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো যবিপ্রবিতে ছাত্রদলের কমিটি গঠন হয়নি। এ ঘটনাকে ভাইরাল হওয়ার নাটক বলে দাবি করে তার বন্ধু ও যবিপ্রবির শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন বলেন, 'সজীব ভাইরাল হওয়ার জন্য আত্ম্নগোপন করেছে। ও যখন আমাকে ম্যাসেজ দেয় তুই কই? আমার সঙ্গে একজন খারাপ ব্যবহার করছে, তিন-চার জন ছেলে হাতে ছুরি আছে।' 'তারপরে ওকে কেউ অ্যাটাক করছিল এবং দৌড়ানি দিছিল। পরবর্তীতে এক বন্ধুর কাছে চলে যায়। আমার কথা রাত নয়টার পর থেকে পরের দিন বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত আমাকে জানাল না কেন যে আমি সেইভ আছি ভালো আছি। ও যেখানে ছিল অবশ্যই ফোন ছিল। ওর জন্য আমি শিক্ষক, ডিএসবি, এনএসআই, পুলিশ, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি মনে করি আমাকে ব্যবহার করে নিজেকে ভাইরাল করার জন্য এমন আত্মগোপন করেছে সজীব' বলে উলেস্নখ করেন তিনি। এদিকে এ ঘটনাকে প্রতারণা বলে দাবি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, 'সজীব যে বিতর্কিত কাজটি করেছে সেটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করেছে। ছাত্রদের আন্দোলনকে পুঁজি করে হাইলাইট হওয়ার জন্য বাজে ভাবে ব্যবহার করেছে। এতে করে ছাত্র সমাজ যেভাবে অপমানিত হয়েছে পাশাপাশি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ক্ষুণ্ন করেছে, যার কোনো ক্ষমা হয় না। সজীব যে নাটক মঞ্চস্থ করেছে তার মদদদাতা যারা তাদের খুঁজে নিয়ে আসা হোক। আমরা মনে করি সজীব যেভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এর জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিত।' তবে ঘটনা জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও সজীব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।