সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা। ফলে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে যান চলাচল শুরু হয়। দীর্ঘ সময় ধরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকায় এর প্রভাবে পড়ে আশপাশের বিভিন্ন সড়কে। তৈরি হয় তীব্র যানজট। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীকে।
অনতিবিলম্বে দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগ ও কর্মসংস্থান তৈরিসহ চার দফা দাবিতে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছয়জনের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে যান। সেখানে তারা বৈঠক করেন।
সন্ধ্যা ছয়টায় ম্যাটস শিক্ষার্থীদের পক্ষে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'আজকে সচিবালয়ে আলোচনায় উনারা আমাদের দাবি মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে আমাদের কাছে তারা একটু সময় চেয়েছেন। আমরা তাঁদের সাত দিনের সময় দিয়েছি। সাত দিনের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে আমরা সারা দেশ থেকে লংমার্চ করে ঢাকায় আসব।'
পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সড়ক অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড়ে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে অনেকে যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হন। শাহবাগে দুটি বড় হাসপাতাল রয়েছে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি ছিল অনেক। এই সড়ক অবরোধের কারণে সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগমুখী রাস্তা, সচিবালয় থেকে শাহবাগ এবং কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগমুখী রাস্তায় প্রচন্ড যানজট দেখা যায়।
একজন নারী পথচারী ভারী বোঝা নিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। সায়েন্স ল্যাবের দিক থেকে আসা এই নারী জানান, অনেকক্ষণ যানজটে আটকা থাকার পর বাধ্য হয়ে তিনি নেমে হাঁটছেন।
বাংলাদেশের গ্রামীণ পর্যায়ে জনগণের চিকিৎসা ও পরিবার-পরিকল্পনা সেবার অংশ হিসেবে ম্যাটসের কোর্স চালু করা হয়েছে। এটি চার বছরের একটি ডিপেস্নামা কোর্স।
শিক্ষার্থীদের দাবি তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বৈষম্য নিরসনে 'সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ'-এর ব্যানারে প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। সারা দেশে আন্দোলন করেও কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় চার দফা দাবিতে শাহবাগে এসে জড়ো হন।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হচ্ছে-অনতিবিলম্বে দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ সৃজন; কোর্স কারিকুলাম সংশোধন ও প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে মেডিকেল ইনস্টিটিউট করা; প্রস্তাবিত 'অ্যালাইড-হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড' বাতিল করে স্বতন্ত্র 'মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ' বোর্ড গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদন্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান।