পিলখানা হত্যাকান্ড
প্রকৃত দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে শহীদ পরিবারের অনুরোধ
প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
৫ আগস্ট-পরবর্তী নিয়োগ পাওয়া আইনজীবীরা পিলখানা হত্যাকান্ড-সংশ্লিষ্ট মামলা পরিচালনায় একেবারে নতুন। এত বড় ঘটনার বিস্তারিত জানতে তাদের পর্যাপ্ত সময়ের প্রয়োজন। এ অবস্থায় চলমান মামলাগুলো পরিচালনা করতে সরকার যেন প্রয়োজনীয় সংখ্যক অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে যথাযথ আইনি লড়াই
অব্যাহত রাখে এবং এর মাধ্যমে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি প্রদানে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, সে অনুরোধ জানিয়েছে শহীদ পরিবারগুলো।
পিলখানা হত্যাকান্ডে শহীদদের পরিবারবর্গ ও বেঁচে ফেরা সেনা কর্মকর্তাদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো তথ্য উলেস্নখ করে বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রম্নয়ারি পিলখানায় (বর্তমান বিজিবি/সাবেক বিডিআর সদর দপ্তর) সংঘটিত হয় এক নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ। নির্মমভাবে হত্যা করা হয় কর্তব্যরত নিরপরাধ ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে।
ওই ঘটনায় অনেকের মরদেহ বিকৃত, ক্ষতবিক্ষত করে মাটিচাপা, ড্রেনে ফেলে দেওয়া ও গুম করা হয়। এ ছাড়া নানাভাবে নির্যাতন করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া কর্মকর্তাদের বেশির ভাগকেও চরম নির্যাতন করা হয়। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের বাসস্থানে ভাঙচুরুডাকাতি, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব অপরাধের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী শহীদ পরিবারের সদস্য ও বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেদিন যে শুধু পিলখানায় বিদ্রোহ হয়েছে, তা নয়, উসকানির মাধ্যমে সারা দেশের রাইফেল ব্যাটালিয়ন ও ট্রেনিং সেন্টারে বিদ্রোহ সংগঠিত করা হয়েছে। পরে তৎকালীন সরকার গঠিত বিভিন্ন কমিশনের তদন্তে ওই ঘটনার নেপথ্যে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের নাম রাজনৈতিক কারণে বেরিয়ে আসেনি। তবে সিভিল কোর্ট ও বিডিআর কোর্টে বিপথগামী জওয়ানদের দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া হয়। তাই অভিযুক্ত ও সাজাপ্রাপ্ত জওয়ানদের নিরপরাধ বলার কোনো সুযোগ নেই এবং তাঁদের মুক্তির দাবি অযৌক্তিক। এমন প্রেক্ষাপটে শহীদ পরিবারের সদস্য ও বেঁচে যাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের দাবি, সব অপরাধীর প্রাপ্য সাজা অবিলম্বে কার্যকর করে যেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ঘটনার সঠিক বিচার না হলে ভবিষ্যতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
অভিযুক্ত সৈনিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা গত ১৫ বছর কোনো দাবি নিয়ে মাঠে আসেননি উলেস্নখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে অযৌক্তিক দাবি তুলে জাতিকে বিভ্রান্ত করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করার অপচেষ্টা করছেন তাঁরা। এভাবে জাতির দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে ওই হত্যাকান্ডের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের আড়াল করার মাধ্যমে বর্তমান ছাত্রুজনতার সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চলছে। এটি সেনা কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপপ্রয়াস বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হত্যাকান্ডের পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র থাকার বিষয়টি বর্তমান সরকার গঠিত কমিশনের অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসব্তেএটাই জাতির প্রত্যাশা। হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী, মদদদাতা ও সহায়তাকারীদের চিহ্নিত করে বিশেষ ট্রাইবু্যনালের মাধ্যমে সরকার যেন দ্রম্নত বিচার করে, সেই দাবি জানাচ্ছেন শহীদ পরিবারের সদস্য ও বেঁচে ফেরা সেনা কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে ২৫ ফেব্রম্নয়ারি জাতীয় শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার দাবি জানান তারা।