প্রাণের বইমেলা

পাঠকের আগ্রহের শীর্ষে উপন্যাস

নতুন বই এসেছে ৯৭টি

প্রকাশ | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রোববার বই মেলায় একটি স্টলে বই দেখছেন পাঠকরা -ফোকাস বাংলা
পেরিয়ে গেল জুলাই গণঅভু্যত্থান পরবর্তী প্রথম বই মেলার নবম দিন। প্রতিদিন সব ধরনের পাঠকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে বইমেলা প্রাঙ্গণ। রোববার আগের দিনের তুলনায় মেলায় পাঠকের উপস্থিতি ছিল কম। এদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের বই মেলায় পাঠক সমাবেশ, আকাশ, প্রথমা, মাওলা ব্রাদার্স, আগামী প্রকাশনীসহ একাধিক স্টল ঘুরে, বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের বইমেলায় পাঠকের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে উপন্যাস ও জুলাই গণ-অভু্যত্থান নিয়ে লেখা বই। মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রেতা তামিম বলেন, 'আমাদের এখানে ইতিহাস ও উপন্যাসের বই সবসময়ই বেশি প্রকাশিত হয়। পাশাপাশি সায়েন্স ফিকশন ও অন্যান্য বই রয়েছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও পুরানো উপন্যাস ও ইতিহাসের বইগুলোতে পাঠকের বেশি আগ্রহ। আমার মনে হয় সচেতন বইপ্রেমী ছাড়া নতুন বইয়ের খোঁজ তেমন কেউ রাখে না।' পাঠক সমাবেশের এক বিক্রেতা জানান, 'আমাদের এখানে আত্মজীবনী ও উপন্যাসের বই এবার বেশি। তবে উপন্যাস বেশি বিক্রি হচ্ছে। এখনও ক্রেতা সংখ্যা তুলনামূলক কম। প্রথমা প্রকাশনীর সূত্রে জানা যায়, সব ধরনের বই প্রকাশনীতে আছে। জুলাইয়ের ৩টা নতুন বই বিক্রি হচ্ছে আর ইতিহাস ভিত্তিক অন্য বইগুলো বিক্রি হচ্ছে। তবে বিক্রি এখনও জমজমাট হয়নি। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিনের মতো রোববারও বেশ কয়েকটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে বাংলা একাডেমির নির্ধারিত মঞ্চে। তবে নবম দিনেও জমেনি লিটলম্যাগ চত্বর। রোববার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ৯৭টি। এর মধ্যে গল্পের বই ৮টি, উপন্যাস ২৫টি, প্রবন্ধ ৫টি এবং কবিতা ৩১টি। এদিন বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় 'মাকিদ হায়দারের কবিতা' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চঞ্চল আশরাফ। আলোচনায় অংশ নেন আসিফ হায়দার এবং শাওন্তী হায়দার। সভাপতিত্ব করেন আতাহার খান। প্রাবন্ধিক বলেন, কবি হিসেবে মাকিদ হায়দারের আত্মপ্রকাশ গত শতাব্দীর ষাটের দশকে। তার নিকট-অতীত ও সমকালীন কবিদের রচনায় রোমান্টিক আবেগ প্রকাশের যে ধারা গড়ে উঠেছিল, তার অনুগামী না-হয়ে নিজস্ব পৃথক একটি ধারা গড়ে তোলার চেষ্টায় তিনি ব্যাপৃত থেকেছেন। তিনি এমন এক বর্ণনারীতির চর্চা করেছেন যা ষাটের দশকের কবিতায় খুব কমই দেখা যায়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিরাভরণ কিন্তু অর্থবোধক সারল্যের অনুশীলন করেছেন তিনি। তাঁর অধিকাংশ কবিতাই আখ্যানের প্রাথমিক উপাদান বা গল্পের প্রধান শর্তবৈশিষ্ট্য নিয়ে রচিত। আলোচকদ্বয় বলেন, কবি মাকিদ হায়দারের কবিতায় গদ্যের যে ভূমিকা ছিল, তা আধুনিক কাব্যধারার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জটিল শব্দ ও বাক্য ব্যবহার না করে তিনি তার কবিতায় সহজবোধ্য ভাষা ও বাক্যরীতির প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। ফলে তাঁর কবিতা সহজেই পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করতে পারে। সভাপতির বক্তব্যে আতাহার খান বলেন, পারিবারিকভাবে সাহিত্য-সংস্কৃতির আবহে বেড়ে ওঠা মাকিদ হায়দার তার সমকালীন কবি সাহিত্যিকদের থেকে ভিন্নমাত্রায় নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন। লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- আবু সাঈদ খান এবং পাভেল পার্থ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী সাহেদ মন্তাজ, শাহ কামাল সবুজ এবং আফরোজা পারভীন। আজ মেলা শুরু হবে বিকাল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে 'স্মরণ : মনিরুজ্জামান' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মাশরুর ইমতিয়াজ। আলোচনায় অংশ নেবেন সালমা নাসরীন এবং মামুন অর রশীদ। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক মনসুর মুসা।