রাস্তায় মৎস্যজীবীরা, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিষেধাজ্ঞা তোলার দাবি

আন্দোলনকারীদের অবরোধের কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় শাহ আমানত সেতুর ওপর যানবাহনের লম্বা লাইন তৈরি হয়

প্রকাশ | ১২ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সাগরে মাছ ধরা বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার শাহ আমানত সেতু এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে মৎস্যজীবীদের একটি সংগঠন -বিডিনিউজ
সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারের দাবিতে সীতাকুন্ডে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছে মৎস্যজীবীদের একটি সংগঠন। মঙ্গলবার দুপুরে শাহ আমানত সেতু এলাকায় সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির ২০ মিনিটের সড়ক অবরোধ কর্মসূচির সময় সেতু ও আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এর আগে গত রোববার উত্তর চট্টলা উপকূলীয় জলদাস সমবায় কল্যাণ সমিতির নেতৃত্বে জেলেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফিশারিঘাট এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে কয়েকশ' মানুষ শাহ আমানত সেতু এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাবুল সরকার। বক্তব্য দেন সমিতির নেতারা। সমাবেশে আমিনুল ইসলাম বলেন, অন্য বছর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল না। এটা নতুন করে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 'অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা ৭২ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। দাবি না মানলে, আবার আমরা রাজপথে নামব। মৎস্যজীবী সবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আন্দোলন করা হবে।' দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমরা ভাসান জাল ব্যবহার করি। আমাদের জালে ছোট মাছ ধরা পড়ে না। তাই এই নিষেধাজ্ঞায় আমাদের অন্তর্ভুক্ত করা অযৌক্তিক।' 'ইলিশের প্রজনন মৌসুমেও ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকে, সেটা আমরা মেনে নিয়েছি। আষাঢ় মাসে ইলিশ ধরার মৌসুম শুরু। এখন আমাদের সব বোট বসে আছে।' নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে চাল বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এই বরাদ্দ আমাদের মৎস্যজীবীরা নেবে না। এতে তাদের পরিবার চলবে না।' বাকলিয়া থানার ওসি মো. নেজাম উদ্দিন জানান, মৎস্যজীবীরা ১৫ মিনিটের মতো সড়কে ছিল। পরে তাদের আশ্বস্ত করে সরিয়ে দেয়া হয়। আন্দোলনকারীরা সরে যাওয়ার পর বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সড়কে যানজট লেগে ছিল। এ সময় শাহ আমানত সেতুর ওপর যানবাহনের লম্বা লাইন সৃষ্টি হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে আসা যাত্রীরা অনেকে হেঁটে সেতু পার হন। গত ২০ মে থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত সব ধরনের নৌযানের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মাছ ও কাঁকড়াসহ কঠিন আবরণযুক্ত জলজ প্রাণীর (ক্রাস্টাসিয়ান্স) জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং মাছের মজুদ সংরক্ষণ, সুষ্ঠু ও সহনশীল আহরণ নিশ্চিত করার স্বার্থে ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর এ সময় মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। তবে ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ছিল ৪৫ দিন। এ বছর তা বাড়িয়ে ৬৫ দিন করা হয়েছে।