আ'লীগের দোসর জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবীব বহাল তবিয়তে

প্রকাশ | ০৪ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনে এখনো আওয়ামী লীগের দোসররা বহাল তবিয়তে। এদের মধ্যে রয়েছে ঠাকুরগাঁও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব। ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর এ প্রকৌশলী নিজ নামে 'হাবীবের প্রযোজনায় শেখ মুজিবের আত্মজীবনী পাঠ' একাধিক অনুষ্ঠান করেছেন। আওয়ামী লীগের দোসর হয়েও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি নতুন করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদারদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করছেন বলে একাধিক স্থানীয় ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি মামলায় দু'বার তার বিরুদ্ধে সমন জারি হলেও তিনি আদালতে উপস্থিত হননি। পরে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে অবশেষে প্রতারণার এ মামলায় জেল খাটেন তিনি। এখানেই ঘটনার শেষ নয়। তিনি পাবনায় পোস্টিংকালে অর্থ লুটপাটে জড়িয়ে পড়েন। এজন্য নিজের নামে একাধিক টিন নম্বর বানিয়েও প্রশাসনের চোখ এড়াতে পারেনি তিনি। পরে দুর্নীতি দমন কমিশনে জালে আকটা পড়েন। এজন্য তার বিরুদ্ধে পাবনা দুর্নীতি কমিশনে মামলা হয়। শুধু তাই নয়, সরকারি কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও তথ্য গোপন করে অননুমোদিতভাবে প্রকৌশলী আহসান হাবীব বিদেশ ভ্রমণ করেন। যা তার পাসপোর্ট পর্যালোচনা করলে বেরিয়ে আসবে। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, তার গ্রামের বাড়িতে রয়েছে কয়েক একর জমির উপর বিশাল বাগানবাড়ি। সাভার ও মোহাম্মাদপুরসহ রাজধানীতে রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট ও পস্নট। সূত্র জানায়, প্রকৌশলী আহসান হাবীব চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেও তাকে বেশি দিন চাকরির বাহিরে থাকতে হয়নি। অদৃশ্য শক্তির বলে নোয়াখালীতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরু করেন। বর্তমানের ঠাকুরগাঁওয়ে দায়িত্বে থেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সহযোগী হিসেবে গোপনে কাজ করে যাচ্ছেন। কাজ না করে টাকা উত্তোলন, প্রকল্পগুলোয় নিম্নমানের ম্যাটারিয়াল সরবরাহ, ঠিকাদারের কাছ থেকে কমিশনবাণিজ্য আত্মীয়স্বজন ও নিজের নামে নামধারি ঠিকাদারের প্রতিষ্ঠান খুলে কাজ ভাগিয়ে নেওয়াসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, আহসান হাবীব আওয়ামী লীগের অত্যন্ত কাছের লোক ছিলেন। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতা হত্যায় জড়িত থাকার মৌখিকভাবে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া হয়। আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (রংপুর সার্কেল) আবুল কালাম আজাদ দৈনিক যায়যায়দিনকে জানান, ঠাকুরগাঁও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছে বলে আমিও লোক মুখে শুনেছি। এর আগে, নানা অনিয়মের কারণে নোয়াখালী থেকে তাকে এখানে বদলি করা হয়েছে। বিষয়গুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযোগের বিষয় নিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিবের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সাক্ষাতে কথা বলবেন। পরে তাকে হোয়াটআপসে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।