মেট্রোরেলে নারী ও শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ

প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর মতিঝিল থেকে উত্তরা-উত্তরগামী একটি মেট্রোরেলে নারীদের কোচে উঠে পড়া পুরুষ যাত্রীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশুদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে নিলুফার পারভিন মিতু নামে এক যাত্রী ফেসবুকে বিষয়টি তুলে ধরেন, যা নজরে এসেছে মেট্রোরেল পরিচালনা কর্তৃপক্ষেরও। বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি তারা অনুসন্ধান করে দেখছেন। পেশায় চিকিৎসক নিলুফার পারভিন 'বাংলাদেশ মেট্রোরেলওয়ে ইনফরমেশন' নামে ফেসবুক গ্রম্নপে লেখেন, 'বুধবার বিকালে তিনি মেট্রোরেলে উঠেছিলেন ফার্মগেট স্টেশন থেকে। নারীদের জন্য সংরক্ষিত একমাত্র বগিতে ১০-১২ জন পুরুষ ছিলেন। বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে তারা এক শিশুসহ নারীদের শ্লীলতাহানি করেন।' ঘটনার বর্ণনায় একটি সংবাদমাধ্যমকে নিলুফার বলেন, 'ফার্মগেট স্টেশন ছাড়ার পর এক নারী কাঁদতে কাঁদতে দরজার দিকে এসে ট্রেন থেকে বের হওয়ার জায়গা দিতে বলেন। সেসময় কারণ জানতে চাইলে ওই নারী ও তার শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা বলেন।' নিলুফার বলেন, 'ওই নারী বলছিলেন, তার মেয়ে ও তাকে বাজেভাবে অ্যাবিউজ করা হয়েছে। প্রথমে বুঝতে পারিনি নারীদের কামরায় কীভাবে সম্ভব। পরে ওই নারী পেছনের দিকে দেখান, সেখানে ১০-১২ পুরুষ যাত্রী ছিল। তারাই মেয়েদের হয়রানি করছিলেন।' নারীদের ওই কামরায় থাকা আরেক যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী প্রভা মাহবুব বলেন, 'কারওয়ানবাজার থেকে ট্রেনে ওঠার পর তিনি ওই বগিতে কয়েকজন পুরুষকে দেখতে পান। ফার্মগেট স্টেশন পার হওয়ার পর একটি মেয়ে চিৎকার করে উঠলে তার মা বিষয়টি নিয়ে অন্যদের কাছে নালিশ করেন। ওই ঘটনার পর পর বাচ্চাটির মা-ও কান্নাকাটি শুরু করেন। তখন সবাই মিলে ওই বগি থেকে পুরুষদের নেমে যেতে বলেন। আগারগাঁও থেকে দু'জন তিনজন করে তারা নেমে গেছেন, সবার শেষে মিরপুর ১০ নম্বরে যারা ছিলেন, তাদের অন্য কম্পার্টমেন্টে পাঠানো হয়।' নিলুফার বলেন, 'আমিসহ এক সাংবাদিক বান্ধবী সেই বগিতে ছিলাম। বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করলে সবার আগে শিশুকে যে নিপীড়ন করে, সে দ্রম্নত নেমে যায়। আর হয়রানির শিকার নারী তার মেয়েকে নিয়ে আগারগাঁও স্টেশনে নেমে যান। প্রচন্ড ভিড় থাকায় তাদের নাম-পরিচয় বা মোবাইল নম্বর তারা রাখতে পারেননি।' ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, 'ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপত্তায় গত তিন দিন ধরে পুলিশ আছে। বিষয়টি জানার পর আমরা ইনভেস্টিগেশন করছি। তবে কোন স্টেশনের ঘটনা, কোন স্টেশনে গিয়ে উনারা অভিযোগ করেছেন, সেটা পোস্টে না থাকায় বিস্তারিত জানতে পারছি না। তারা যদি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাহলে হয়ত পুরো বিষয়টি জানা যাবে। এ নিয়ে আমি এমআরটি পুলিশের ডিআইজির সঙ্গেও কথা বলেছি।' নারীদের কামরায় পুরুষ ওঠা নিষেধের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'এরপরও তা না মানা দুঃখজনক। এটা মেনে চলা উচিত। কিন্তু আমাদের অনেকের ক্যারেক্টারই হয়ে গেছে আইন অমান্য করা। এমন হলে আমরা কীভাবে চেইঞ্জ করব! মেট্রোরেলে পুলিশ এরই মধ্যে দায়িত্ব পালন করছে। তারা যেন নারীদের নির্ধারিত কামরার পাশের কামরায় অবস্থান করেন সেই নির্দেশনা দিচ্ছি।'