মুরাদনগরে আ'লীগ নেতা কিবরিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে সরকারি কাজ

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের প্রায় সর্বত্র পতিত এই দলটির নেতাকর্মীরা নীরব হয়ে গেলেও কুমিলস্নার মুরাদনগরে এখনো তাদের ফ্যাসিবাদী আচরণের পরিবর্তন হয়নি। এ অঞ্চলের সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুলস্নাহ হারুন আত্মগোপনে থেকে তার অনুসারী কিবরিয়াকে দিয়ে সাধারণ জনগনের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছেন। পাশাপাশি তাকে দিয়ে বিএনপি নেতাদেরও নানাভাবে চাপ দিচ্ছেন এবং সরকারি কাজ বণ্টনও নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মুরাদনগরের অব্যাহতভাবে দাপট দেখানো কিবরিয়ার পরিচয় নিশ্চিত হতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুলস্নাহ হারুনকে এমপি বানাতে মুরাদনগরের বিভিন্ন সভা সমাবেশে নৌকা মার্কায় ভোট চান। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি জামায়াত ও সাধারণ মানুষদের কোণঠাসা করে রাখতেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলন ঠেকাতে এই নেতা ছাত্রলীগ-যুবলীগকে লেলিয়ে দেন। ছাত্রজনতার আন্দোলন ঠেকাতে মোটা অংকের টাকাও খরচ করেন। জানা যায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই কিবরিয়া রূপ বদলাতে শুরু করেন। প্রথমে যান গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুরের কাছে। তার সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে ছাড়লে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ফলে তেমন সুবিধা করতে পারেন নি গোলাম কিবরিয়া। এরপরই আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়ার ছবি দেখা যায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অগ্রসেনানী উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার সঙ্গে। শুধু তাই নয় গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতারা সক্রিয় হতে মুরাদনগরবাসী ব্যানারে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়াকে সংবর্ধনার আয়োজন করেন। যদিও তোপের মুখে মঞ্চে উঠতে পারেননি গোলাম কিবরিয়া। এতেও তিনি ক্ষান্ত হননি। গত সাড়ে ১৫ বছরের মতো এখনো মুরাদনগরে বিএনপি নেতাকর্মীদের নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একসময় তিনি প্রকাশ্য সমাবেশে নৌকার জন্য ভোট চেয়ে বক্তব্য দিলেও এখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নতুন দলের কমিটি গঠনের জন্য বিএনপি নেতাদের চাপ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মুরাদনগরের টনকী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন- 'আওয়ামী লীগের গোলাম কিবরিয়া আমাদের এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটি গঠন করে দিতে বলে আমাকে। আমি বললাম, আমরা তো বিএনপি করি। আমি তিন তিন বারের মেম্মার অথচ এলাকার উন্নয়নে সরকারি কাজ পেতে নাকি বৈষম্যবিরোধী কমিটি করা লাগবে!' শ্রীকাইল ইউনিয়নের গোলাম হাক্কানী বলেন- 'আমাদের এলাকার এক ছেলে নানান মানুষের টাকা আত্মসাৎ করায় দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তে সে গ্রাম ছাড়া। অথচ সেই টাকা আত্মসাৎকারীকে গ্রামে আসতে দিতে হুমকি দিচ্ছে গোলাম কিবরিয়া। এমনকি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটিও করতে বলে। তার কথা না শোনায় আমার বাড়িতে পুলিশ পাঠায় গোলাম কিবরিয়া। আওয়ামী লীগ পতনের পরেও আওয়ামী লীগের অত্যাচার থামেনি মুরাদনগরে। মুরাদনগরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটি গঠনের জন্য বিএনপি নেতাদের চাপ দিচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতা কিবরিয়া।'