কালোটাকার ভাগ পুঁজিবাজারও চায়

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রোববার রাজধানীতে বাজেটপরবর্তী সংবাদ সম্মেলন করে ডিএসই -যাযাদি
ফ্ল্যাট, জমি, হাইটেক পার্ক ও ইকোনমিক জোনের মতো পুঁজিবাজারেও অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। রোববার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরে। ডিএসইর পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট কর প্রদানসাপেক্ষে ফ্ল্যাট, জমি কেনা এবং ইকোনমিক জোনে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। 'এতে অর্থ পাচার রোধ হবে এবং বিনিয়োগ বাড়বে। আমরা পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত বন্ডেও অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চায়। এতে পুঁজিবাজার উপকৃত হবে এবং বিনিয়োগ বাড়বে।' তবে কোম্পানির বোনাস লভ্যাংশ বিতরণ ও অতিরিক্ত রিজার্ভের উপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব নিয়ে ডিএসইর পরিচালকরা ভিন্নমত প্রকাশ করলে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাশেম বলেন, 'বাজেটে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, আমরা তার পক্ষে।' সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল হাসেম এবং পরিচালক রকিবুর রহমান প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্টক ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে ক্যাশ ডিভিডেন্ড উৎসাহিত করতে স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ হারে নতুন করে কর আরোপকে স্বাগত জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা তালিকাভুক্ত কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংস বা রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হলে বর্ধিত রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপকেও স্বাগত জানান। এর আগে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য যেসব প্রস্তাবাদি রাখা হয়েছে, তাতে বাজারে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং জাতীয় অর্থনীতি আরো গতিশীল হবে। তিনি বলেন, 'ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ আয়ের করমুক্ত সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এতে করে পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে নিবাসী ও অনিবাসী সব কোম্পানির ক্ষেত্রে লভ্যাংশ আয়ের ওপর দ্বৈতকর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ আয়ের ওপর একাধিকবার কর আরোপ করা হবে না।' সার্বিকভাবে বাজেটকে স্বাগত জানালেও স্টক এক্সচেঞ্জকে ডিমিউচু্যয়ালাইজেশন পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য পূর্ণ কর অব্যাহতি, এসএমই মার্কেটের লেনদেনের ওপর উৎসে কর অব্যাহতি ও স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক হোল্ডারদের কাছ থেকে উৎসে কর সংগ্রহের হার হ্রাস করার দাবি জানিয়েছে ডিএসই। ডিএসইর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান, শরীফ আতিউর রহমান ও মনোয়ারা হাকিম আলী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ঢাকায় সিএসইর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম ফারুক বলেন, 'বাজেটের জন্য সিএসই যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিল তার মধ্যে কোনোটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। প্রস্তাবগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি।' তিনি আরও বলেন, 'বাজেটে করজালের আওতা বৃদ্ধি হুন্ডির পরিবর্তে বৈধ পথে প্রবাসী আয় প্রেরণে প্রণোদনা এবং চার স্তর বিশিষ্ট নতুন মূল্যসংযোজন কর বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের কথা উলেস্নখ রয়েছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর জোর প্রদান করা হয়েছে। যা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করছি।' সিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের বিদ্যমান কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা, নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয় তিন বছর করমুক্ত রাখা, করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা ১ লাখ টাকায় উন্নীত করার দাবি জানায়।