ডিআইজি মিজানের শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট এক দুদক কর্মকর্তাকে 'ঘুষ দেওয়ার কথা' ফাঁস করে নতুন করে আলোচনায় আসা পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে 'আইন অনুযায়ী শাস্তির' ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, 'আপনারা তো সবই দেখছেন, ডিআইজি মিজান- সে অলরেডি সাসপেন্ড হয়েছে, ওএসডি হয়ে পড়ে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।' মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও সংস্থাসমূহের মধ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় গত বছরের জানুয়ারিতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় মিজানকে। এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক; এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান গত ৮ জুন দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এর সপক্ষে তাদের কথোপকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। ডিআইজি মিজান গত ১০ জুন বলেন, সব জেনেশুনেই তিনি কাজটি করেছেন 'বাধ্য হয়ে'। 'তিনি (বাছির) যে একজন দুর্নীতিগ্রস্ত, তা প্রমাণ করতে, তাকে ফাঁসানোর জন্য করেছি এবং নিজের সেইফটির জন্য করেছি।' অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুদক। তবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সে সময় ডিআইজি মিজানের দিকে ইংগিত করে বলেন, ঘুষ দেয়াও ফৌজদারি অপরাধের মধ্যে পড়ে। পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে সে সময় বলা হয়, ডিআইজি মিজানের ব্যক্তিগত কোনো কাজের দায় পুলিশ বাহিনী নেবে না। পুলিশ হিসাবে বাড়তি কোনো সুযোগও তিনি পাবেন না। দোষী প্রমাণিত হলে সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু ঘুষ দেয়ার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করার পরও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে টিআইবি। তাকে গ্রেপ্তার না করায় উষ্মা প্রকাশ করে খোদ সর্বোচ্চ আদালত থেকে প্রশ্ন করা হয়- তাহলে কি ডিআইজি মিজান দুদকের চেয়ে বড়? ডিআইজি মিজানকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না- সেই প্রশ্নটি মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে রাখেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, 'কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং আইন অনুযায়ী শাস্তি বিধান হচ্ছে।' পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি ডিআইজি মিজানুর রহমানের ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সোমবার 'উচ্চ পর্যায়ের' একটি তদন্ত কমিটি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মইনুর রহমান চৌধুরীর (অ্যাডমিন অ্যান্ড অপারেশন্স) নেতৃত্বে তিন সদস্যের ওই কমিটি 'ঘুষের অর্থের উৎস' জানতে ইতোমধ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা। অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) শাহাবুদ্দীন কোরেশী ও পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মিয়া মাসুদ হোসেন ওই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এআইজি সোহেল রানা বলেন, 'প্রতিবেদন জমা দেয়ার ক্ষেত্রে কমিটিকে কোনো সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়নি। তবে দ্রম্নত তাদের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।