মহাপরিচালকের পদত্যাগ চান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালকরা

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সামীম মোহাম্মদ আফজাল
যাযাদি রিপোর্ট এক সহকর্মীকে 'ক্ষমতার অপব্যবহার' করে সাময়িক বরখাস্ত করে সমালোচনার মুখে থাকা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির পরিচালকরা। সোমবার আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে এক 'জরুরি সভায়' এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে। সভায় ফাউন্ডেশনের ২৫ জন পরিচালকের মধ্যে ২৩ জন অংশ নেন। সভার কার্যপত্রে দেখা গেছে, মহাপরিচালককে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য পরিচালক এবং প্রকল্প পরিচালকরদের ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের যাকাত বিভাগের পরিচালক মাহাবুব আলম। মঙ্গলবার মাহাবুব আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে এতে বলা হয়েছে, 'ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাবমর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে এবং সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় এই সংস্থার পরিচালকরা মনে করেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে সম্পর্ক, এখনকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্ট অচলাবস্থা এবং মহাপরিচালকের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে অত্র সংস্থার মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল মহোদয়কে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।' এছাড়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে নিতে অবিলম্বে বোর্ড অব গভর্নরসের জরুরি সভা আহ্‌বান করার পক্ষেও সভায় পরিচালকরা মত দেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদারকে গত ৩০ মে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল। ওই বরখাস্তের আদেশ বাতিল করতে গত ৩ জুন ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন মহীউদ্দিন। এ ঘটনায় পরে মহাপরিচালককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। দুর্নীতির অভিযোগে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না এবং তার নিয়োগ কেন বাতিল করা হবে না- সাত কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে বলা হয় নোটিশে। পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্ত করার আদেশও বাতিল করা হয়। সোমবারের সভার বিষয়ে ফাউন্ডেশনের পরিচালক (জাকাত বিভাগ) মাহাবুব আলম মঙ্গলবার বলেন, বর্তমান মহাপরিচালক দীর্ঘ দশ বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠানে আছেন। তিনি বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেন যেসব নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশাল দূরত্ব সৃষ্টি হয়। 'বর্তমান মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গেও দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে বায়তুল মোকাররমের পিলার ভেঙে ফেলার একটি ঘটনায় নিয়ম না মেনে তিনি একজন পরিচালককে অপসারণ করেছিলেন। এটা নিয়েও মন্ত্রণালয় থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। তার চুক্তি কেন বাতিল করা হবে না-তাও জানতে চেয়েছে মন্ত্রণালয়।' এসব ঘটনায় ফাউন্ডেশনে অচলাবস্থার তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'এসব ঘটনার পর মহাপরিচালক ফাউন্ডেশনে আসেননি। সেখানে অচলাবস্থা চলছে। এখন পরিস্থিতি আরও খারাপ। উনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। এখন জুন মাস চলছে। আর্থিক বছরের শেষ পর্যায়। এ অবস্থায় নতুন ডিজি না পেলে আমরা কাজ করতে পারব না। এপিএর টার্গেট পূরণ করতে পারব না। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।' সভায় পদত্যাগ চেয়ে করা অনুরোধের চিঠি মহাপরিচালকের কাছে পৌঁছানো হলেও এখনও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি বলে জানান মাহবুব আলম। তিনি বলেন, উনার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তিনি বলেছেন অফিসে আসবেন না, আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলবেন না। তিনি ছুটিতে আছেন। আমাদের বক্তব্য লিখিত আকারে দিতে বলেছেন। আমরা সিদ্ধান্তটা তার ব্যক্তিগত সহকারীর কাছে দিয়েছি। এ বিষয়ে জানতে মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালের মোবাইল ফোনে কল করেন এবং এসএমএস করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।