স্বাস্থ্যবিমা চালুর পরিকল্পনা আছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে তিনটি উপজেলায় এই বীমা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রকাশ | ২০ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ সাক্ষাৎ করেন -ফোকাস বাংলা
যাযাদি রিপোর্ট দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যবীমা চালুর পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে তিনটি উপজেলায় এই বীমা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন তিনি। বুধবার সংসদে টেবিলে উপস্থাপিত সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, 'দেশের জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্যবীমা চালু করার পরিকল্পনা আছে। 'এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমরা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য টাঙ্গাইল জেলায় মধুপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতি উপজেলায় ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে স্বাস্থ্যবীমা কার্যক্রম চালু করেছি।' প্রধানমন্ত্রী জানান, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার 'হেলথ কেয়ার ফাইন্যান্সিং স্ট্র্যাটেজি ২০১২-২০৩২' প্রণয়ন করেছে। এ কৌশলের অধীনে প্রাথমিকভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিতে 'স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি-এসএসকে' শীর্ষক পাইলট কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে ৭৮টি ভর্তিযোগ্য রোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির পাইলট প্রকল্প সম্প্রসারণ করে টাঙ্গাইল জেলার অবশিষ্ট নয়টি উপজেলাও এর আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা। কালিহাতি, ঘাটাইল ও মধুপুরের দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ৮১ হাজার ৫২৮টি পরিবারের নিবন্ধন সম্পন্ন করে ৮১ হাজার ১৭৭টি পরিবারেরর মধ্যে এসএসকে কার্ড বিতরণ করার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পাইলট প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় 'হেলথ ইকোনমিকস' ইউনিটের আওতায় পরবর্তীতে সারা দেশে স্বাস্থ্য বীমা চালু করার মাধ্যমে ওষুধ ও চিকিৎসা দেয়ার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ছিল সাড়ে চার কোটি। চলতি বছরের এপিলে তা উন্নীত হয়েছে ১৬ কোটি পাঁচ লাখে। একই সময় ইন্টারনেট গ্রাহক ৬০ লাখ থেকে নয় কোটি ৩৭ লাখে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে টেলিডেনসিটি ৯৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ ও ইন্টারনেট ডেনসিটি ৫৭ শতাংশ। ২০০৮ সালের ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ চার্জ প্রতি এমবিপিএস ২৭ হাজার থেকে কমিয়ে বর্তমানে ২৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে ২০১৮ সালে ১১৫তম অবস্থানে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। ত্রিশ লাখ গণশহীদ চিহ্নিত করা হবে সারাদেশে ৩০ হাজার গণশহীদ চিহ্নিত করা এখনো সম্ভব হয়নি। আগামীতে গণশহীদদের নাম-পরিচয় চিহ্নিত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সদস্য অসিম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি একথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর জন্য এ প্রশ্ন টেবিলে উত্থাপন করা হয়। সংসদের এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সংগ্রহ করে ডাটাবেজ প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকাশিত তালিকার বাইরে যদি কোনো মুক্তিযোদ্ধা থাকেন তা চিহ্নিত করে ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। 'এই কার্যক্রম সম্পন্ন হলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হবে। এই তালিকার অংশ হিসেবে বর্তমানে মোট পাঁচ হাজার ৭৯৫ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম-ঠিকানা সম্বলিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে গেজেডভুক্ত বেসামরিক শহীদ ২ হাজার ৯২২ জন, গেজেটভুক্ত সশস্ত্র বাহিনী শহীদ ১ হাজার ৬২৮ জন, গেজেটভুক্ত বিজিবি শহীদ ৮৩২ জন এবং গেজেটভুক্ত শহীদ পুলিশ ৪১৩ জন।' ১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধে সারা দেশে ত্রিশ লাখ গণশহীদ চিহ্নিত করা এখনো সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে এ লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রমে সারাদেশে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও পরবর্তী সময়ে পরলোকগত মুক্তিযোদ্ধাদের ২০ হাজার সমাধিস্থল সংরক্ষণ করা হবে।