তিন সিটি নিবার্চন তামাশায় পরিণত হচ্ছে: ফখরুল

প্রকাশ | ২৮ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বিএনপির মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কাযার্লয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন Ñযাযাদি
নিবার্চন কমিশনের ব্যথর্তার কারণে আসন্ন তিন সিটি নিবার্চন তামাশা ও প্রহসনে পরিণত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কাযার্লয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন আশঙ্কার কথা জানান। এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মিজার্ ফখরুল বলেন, স্থানীয় সরকারের নিবার্চনগুলো এমন প্রহসনে পরিণত হয়েছে যে, এ নিয়ে কথা বলতে নিজেরই এখন সংকোচ বোধ হয়। তামাশা, তামাশার চূড়ান্ত। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গানের সুরে বায়েস্কোপ দেখানো হয়। এখন সিটি করপোরেশন নিবার্চন নিয়ে বায়েস্কোপ দেখানো হচ্ছে, সরকার বায়েস্কোপ দেখাচ্ছে। তারা নিবার্চন কমিশনকে অনতিবিলম্বে তিন সিটিতে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চন করতে সব ব্যবস্থা নেয়ার জন্য, সব গ্রেপ্তারকৃত নেতাকমীের্ক মুক্তি দিয়ে নিবার্চনের পরিবেশ তৈরি করার আহŸান জানান। অন্যথায় তাদের পদত্যাগ দাবি করেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, নিবার্চন কমিশন একটা সংবিধানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। এর প্রধান ও কমিশনার যাদের করা হয়েছে তারা শপথ নিয়েছেন। তারা কোনো রাগ-বিরাগের বশবতীর্ না হয়ে কমিশনের নিজেদের যে ক্ষমতা আছে তা প্রয়োগ করবেন এবং সুষ্ঠু-অবাধ নিবার্চন করার জন্য তারা দায়বদ্ধ। দুভার্গ্য এ জাতির যে, নিবার্চন কমিশন তার আশপাশ দিয়ে যাচ্ছে না। তাদের ফোন করলে বলেন, চেষ্টা করছেন, দেখছেন। চেষ্টা করার জন্য তো তাদের রাখা হয়নি। তাদের রাখা হয়েছে এ রাষ্ট্রের নিবার্চন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু-অবাধ করার জন্য। তাদের অবশ্যই কতৃর্ত্বকে প্রয়োগ করে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নিবার্চন করার জন্যই সংবিধান ও দেশের মানুষ দায়িত্ব দিয়েছে। তারা সেখানে ব্যথর্ হচ্ছেন। রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে ক্ষমতাসীন দলের নিবার্চনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, মন্ত্রী পদমযার্দায় ব্যক্তি ও সাংসদরা নিবার্চনের প্রচারণায় অংশ নেয়া, বিরোধী দলের নেতা-কমীের্দর গণগ্রেপ্তার, ধানের শীষের প্রাথীর্র পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ নানা ঘটনার চিত্র তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, তাদের কথা বাদ দেন, একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ‘সুজন’ কয়েকদিন আগে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, কোথাও কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। এটাই বাস্তবতা। পুরো নিবার্চন প্রক্রিয়ায় তারা একটা ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে ফেলেছেন। সামাজিক মাধ্যমে একজন কমেন্টও করেছেন উৎসবের নগরী না হয়ে এটা ত্রাসের নগরীতের পরিণত হয়েছে। মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিন সিটিতে গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে। শুক্রবার পত্রিকারগুলোতেও গ্রেপ্তারের খবর এসেছে। নিবার্চনকে শেষ করে দেয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। প্রহসনের নিবার্চন জেনেশুনেও নিবার্চনে যাচ্ছেন কেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটির্। তারা স্থানীয় সরকারের সব নিবার্চনে অংশ নিয়েছেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের সঙ্গে রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকতে চান। স্থানীয় সরকার নিবার্চন সরকার পরিবতর্ন করে না। যে কারণে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিটি স্থানীয় সরকারের নিবার্চনে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকার ও নিবার্চন কমিশনের ভ‚মিকা দুইটা মিলেই প্রমাণ করছে যে, আগামী সংসদ নিবার্চন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না। সিলেটে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা হয়নি সিলেট সিটি করপোরেশন নিবার্চনে মেয়র পদে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সমঝোতা হয়নি বলে জানিয়েছেন মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারা চেষ্টা করেছেন ২০ দলকে একসঙ্গে নিবার্চন করানোর জন্য। জামায়াতে ইসলামী এখন পযর্ন্ত নিবার্চনী মাঠে আছে। তারা থাকতেই পারে। তারা এখন পযর্ন্ত তাদের সমথর্ন দেননি। এর জন্য ২০ দলের জাতীয় পযাের্য়র ঐক্য বিনষ্ট হয়নি। সিলেটে জামায়াতের সমথর্ন ছাড়া বিজয়ী হতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি ১৯৯১ সালে যে নিবার্চন করেছে সেই নিবার্চনে বিএনপি একাই লড়েছে এবং সরকার গঠন করেছে। সুতরাং বিএনপিকে জেতা বা না জেতার জন্য কারও ওপর নিভর্র করতে হয় না। তারা ঐক্য করেছেন বৃহত্তর স্বাথের্। সেই স্বাথর্টা হচ্ছে এই দানবের হাত থেকে মুক্তি পেতে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের ঐক্য। নিবার্চন তো হচ্ছে তাদের দ্বিতীয় ঐক্য। মূল বিষয়টা হচ্ছে এই দানবীয় সরকারকে সরানোর জন্য তারা শুধু ২০ দলীয় ঐক্য নয়, তারা তো জাতীয় ঐক্যেরই ডাক দিয়েছেন। সেটা তারা মনে করেন যে, অনেক দূর এগিয়েছে। বাম ৮ দলীয় জোট নিজেরা একটা প্লাটফমর্ তৈরি করে তারা যে কথা বলেন সেই দাবিগুলো নিয়ে এসেছে। তারা আশা করেন বাকি দলগুলো এটা চিন্তা করবে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হলে এ ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। শব্দ ঃ ৬৫০