পাবনায় তিন বান্ধবীর একসঙ্গে বিষপান একজনের মৃত্যু

প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা
একসঙ্গে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ঈশ্বরদীর বঁাশেরবাদা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির তিন ছাত্রী। তাদের মধ্যে শনিবার সকালে বষার্ খাতুন নামে এক শিক্ষাথীর্ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ওই তিন ছাত্রী পরস্পর বন্ধবী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিহত বষার্ পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের চরসাহাদিয়ার গ্রামের কবি শেখের মেয়ে। বষার্র বাবা কবি শেখ তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য দুইজন হলো চরসাহাদিয়ার গ্রামের তালেব হোসেনের মেয়ে ববিতা খাতুন (১৪) ও কুবের দাসের মেয়ে সঙ্গীতা দাস (১৪)। বৃহস্পতিবার দুপুরে পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের চরসাহাদিয়ার গ্রামে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু কী কারণে তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, এক শ্রেমিকের সঙ্গে তিন বান্ধবীর প্রেম। প্রেমিক উধাও হওয়ার খবর পেয়ে অভিমানে তারা একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তবে পুলিশ বলছে, দুটি বিষয়ের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় পরিবারের লোকজনের ভয়ে ও লজ্জায় তারা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে চরসাহাদিয়ার মাঠের মধ্যে বষার্, ববিতা ও সঞ্চিতা একসঙ্গে কীটনাশক ওষুধ খেয়ে গোঙড়াতে থাকে। এ সময় মাঠের লোকজন শব্দ শুনে এগিয়ে যায়। তাদের উদ্ধার করে দাপুনিয়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক আবদুস সালামের কাছে নিয়ে যায়। পল্লী চিকিৎসক আবদুস সালাম জানান, প্রাথমিক অবস্থায় তিনজনের বিষ পেট থেকে বের করা হয়। কিন্তু বষার্র অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রæত তাকে পরিবারের লোকজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ববিতা বিষমুক্ত হওয়ায় তাকে পরিবারের লোকজন বাসায় নিয়ে যায়। আর সঞ্চিতার অবস্থা কিছুটা খারাপ হওয়ায় তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টেলিফোন অপারেটর সঞ্চিতার ভতির্র বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার চিকিৎসা চলছে। পল্লী চিকিৎসক আবদুল সালাম বলেন, বিষপান করা তিনজনের মুখ থেকে জেনেছেন পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ হওয়ায় পরিবারের লোকজনের ভয়ে এবং লজ্জায় তারা যুক্তি করে একসঙ্গে বিষপান করেছে। এদিকে বঁাশেরবাদা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবেমাত্র অধর্বাষির্ক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। শিক্ষকরা খাতা দেখছেন, এখনো কোনো ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি পরীক্ষার মূল্যায়িত কোনো খাতা কোনো শিক্ষাথীের্কও দেখানো হয়নি। দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ ঠাÐু বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন- মেয়ে তিনটি একটি ছেলের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে প্রেম করে আসছিল। আকস্মিকভাবে ছেলেটি উধাও হয়ে যায়। এ কারণে এই তিন স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বিষপান করেছিল। পাবনা সদর থানার ওসি মো. ওবায়েদুল হক বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদশর্ন করেছি। তিন ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। বিজ্ঞান ও অংক পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য তারা বিষপান করেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে। প্রেম-সংক্রান্ত বিষয় কিছুই জানায়নি। তাই সে সম্পকের্ কিছু বলতে পারছি না।’