বরিশালে নিণার্য়ক ৬৫ হাজার ভোটার

প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ
বরিশাল সিটি করপোরেশন নিবার্চনে এবার নতুন করে ৩১ হাজার ভোটার হয়েছেন; তরুণ এসব ভোটার ছাড়াও এ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ৩৫টি বস্তিতে বসবাস করেন আরও প্রায় ৩৪ হাজার ভোটার। নতুন ও বস্তিবাসী মিলে ৬৫ হাজার ভোটারের ভোট টানতে আলাদাভাবে নজর দিচ্ছেন প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের মেয়র প্রাথীর্রা। তরুণ ভোটারদের মন কাড়তে প্রাথীর্রা নানা প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন। বস্তিবাসীর ভোট কেনার প্রবণতা আগে থাকলেও এখন তা কাজে দেবে না বলে মনে করছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রাথীের্দর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নতুন প্রজন্মের ভোটারদের কল্যাণের দিক বিবেচনা রেখে তাদের সমথর্ন আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে। আর বস্তিবাসীর কমর্সংস্থানসহ তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়া হচ্ছে। আগামী ৩০ জুলাই নিবার্চনে বরিশাল সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রাথীর্ সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও বিএনপি মনোনীত প্রাথীর্ মো. মজিবুর রহমান সরওয়ারসহ ছয়জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। ২০১৩ সালের নিবার্চনে এই সিটিতে মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ২৫৭টি, এবার ভোটারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬টি। নগরীর ৩০টি ওয়াডের্র মধ্যে পাঁচটি ওয়াডের্র বিভিন্ন এলাকায় ৩৫ বস্তি রয়েছে, সেখানে ভোটার ৩৪ হাজার বলে রিটানির্ং কমর্কতার্র দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়। বরিশাল জেলা ‘সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক)’ সভাপতি গাজী জাহিদ হোসেন মনে করেন, যে কোনো নিবার্চনে নতুন ভোটারটা একটা ‘ফ্যাক্টর’। তিনি বলেন, নতুন ভোটরদের মন নরম থাকে, তাদের কাছে সত্য-মিথ্যা কোনো প্রতিশ্রæতি করা হলে তারা সহজে এতে বিশ্বাস করে। প্রাথীর্রাও তাদের ভোট পেতে একাধিক বাস্তবায়ন ও অবাস্তবায়নযোগ্য প্রতিশ্রæতি করে থাকে। কোন প্রাথীর্ কী ধরনের প্রতিশ্রæতি দেয়, সেই অনুযায়ী তারা নতুন প্রজন্মের ভোট পেতে পারেন বলে মনে করেন সনাকের সভাপতি। বস্তিবাসী ভোটারের বিষয়ে গাজী জাহিদ বলেন, ‘বস্তিবাসী নানা অভাব-অনটনের মধ্যে থাকে, প্রাথীের্দর থেকে তাদের একাধিক লোভ-লালসা দেখানো হয়, প্রকৃতপক্ষে এসব কাজে আসে না বলে মনে হয়।’ নাগরিক সংগঠন সুজন’র জেলা সভাপতি আক্কাস হোসেন বলেন, যে প্রাথীর্ প্রকৃতপক্ষে নগরের উন্নয়নে কাজ করবেন, যিনি নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবেন, সেই যোগ্য, সৎ ও নিভীর্ক ব্যক্তিকে নতুন প্রজন্মের ভোটাররা নিবাির্চত করবে। শহরের ৩৪ হাজার বস্তিবাসীর সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যদিও তারা সরকারি জায়গা-জমিতে থাকে তারাও আমাদের মতো সচেতন, এত সহজে তাদের মন গলানো যায় না। তারা এখন আগের মতো পয়সার বিনিময়ে ভোট দেয় না। সঠিক প্রাথীের্কই তারা বিজয়ী করবে। আওয়ামী লীগের নিবার্চনী পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক গোলাম আব্বাছ দুলাল বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের ভোটাররা দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানে, ডিজিটাল বাংলাদেশে তারা বসবাস করে। তারা তাদের যোগ্য ও তরুণ প্রাথীের্ক ভোট দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ বস্তিবাসীর বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগের প্রাথীর্ বিজয় হলে এই নগরীর সব মানুষের উন্নয়নে কাজ করবে, বিশেষ করে দরিদ্র ও বস্তিবাসীর সাবির্ক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বিএনপি প্রাথীর্র নিবার্চনী পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য আনোয়ারুল হক তারিন বলেন, বিএনপি ক্ষমতা দাপট নিয়ে থাকে না, নতুন প্রজন্মের ভোটারদের কল্যাণে নগরীর উন্নয়ন করা হবে, কারণ তারা আমাদের ভবিষ্যৎ সমাজের হাল ধরবেন। তিনি বলেন, এ শহরের বস্তিবাসী বেশি অবহেলিত। আমরা নিবাির্চত হলে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া, তাদের কমর্সংস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেয়া হবে। পলাশপুর, স্টেডিয়াম বস্তি, কেডিসি বস্তি, ভাটারখাল, বঙ্গবন্ধু কলোনি ও কলাপট্টিসহ বেশ কয়েকটি বস্তির বাসিন্দারা বলেন, রাজনৈতিক চাপ বা অথের্র বিনিময়ে কাউকে তারা সমথর্ন দেবেন না। কেডিসি বস্তির বাসিন্দা শিরিনা আক্তার বলেন, ‘টাকা দিয়া ভোট বিক্রি করা হবে না। যারা আমাদের উন্নয়ন করবে তারেই ভোট দিব।’ ভাটারখাল বস্তি এলাকার ভোটার আরজ মিয়া বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনীতি করি না, যে প্রাথীর্ আমাদের কথা শুনবে, আমাদের কাজ করার সুযোগ করে দিবে, তার সাথেই আমরা আছি।’ এবার নথুল্লাবাদ থেকে নতুন ভোটার হয়েছে মো. ইব্রাহিম মিয়া। তিনি বলেন, ‘যিনি আমাদের কমর্সংস্থানের জন্য কাজ করবেন, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করবেন, পাড়া-মহল্লার মানুষের দুদিের্ন এগিয়ে আসবেন বলে মনে হয় তাকেই ভোট দেব।’