যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলো বাড্ডা নথর্ ইউলুপ

নৌকায় ভোট দিয়ে কেউ বঞ্চিত হয় না: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার রাজধানীর বাড্ডা নথর্ ইউলুপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন Ñযাযাদি
হাতিরঝিল প্রকল্পের আওতায় নিমির্ত বাড্ডার নথর্ ইউলুপ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, টানা দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকাতেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নৌকা মাকার্য় ভোট দিয়ে কেউ বঞ্চিত হয় না, স্বাধীনতাও যেমন পেয়েছে, উন্নয়নও তেমন পাবে।’ বাড্ডা নথর্ ইউলুপের নিচে শনিবার বিকালে এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার যানজট নিরসনে ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সেটা বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেয়ার কথাও বলেন। যানজটের কথা বলতে গিয়ে উন্নত দেশগুলোর উপমা টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যানজট নতুন কিছু না। পৃথিবীর বড় বড় দেশে যানজট আছে।’ যানজট নিরসন ও সৌন্দযর্বধর্ন করে ঢাকাকে একটি আধুনিক ও উন্নত শহরের আদলে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্ল্যান নিয়েছি পুরো ঢাকাকে ঘিরে একটি রিংরোড করব। যেটা হবে সম্পূণর্ এলিভেটেড রিংরোড। যোগাযোগটা যাতে আরও সহজ হয় সেই ব্যবস্থাটা আমরা হাতে নিয়েছি।’ ‘ঢাকা সাকুর্লার রুট’ এবং ‘ইস্টানর্ বাইপাস’ নিমাের্ণর কাযর্ক্রম গ্রহণ করার কথাও প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-ময়মনসিংহের চারলেনের মহাসড়ককে শিগগিরই ছয় লেনে উন্নীত করা হবে বলেও জানান তিনি। উত্তরা থেকে মতিঝিল পযর্ন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নিমার্ণকাজ চলছে। ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগঁাও পযর্ন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। বাকি অংশ ২০২০ সালের মধ্যে চালু হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এক ঘণ্টায় যাতায়াতের জন্য বুলেট ট্রেন চালুর পরিকল্পনা হাতে নেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাতে লোকজন ঢাকায় দিনে কাজ করে দিনেই ফিরে যেতে পারেন।’ এ ছাড়া ঢাকা থেকে সিলেট, রাজশাহী, দিনাজপুর, বরিশাল এবং কলকাতায় দ্রæতগতির ট্রেন চালু করার পরিকল্পনার কথাও বলেন শেখ হাসিনা। ঢাকায় পাতাল রেল চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুরো ঢাকাকে ঘিরে পাতাল ট্রেন যাতে করা যায়, সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পযর্ন্ত ১৬ দশমিক ৪০ কিলোমিটার পাতাল রেল এবং পূবার্চল থেকে কুড়িল পযর্ন্ত ১০ দশমিক ২০ কিলোমিটার উড়াল রেল বাস্তবায়নের কাযর্ক্রম নেয়া হয়েছে। হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী, মিরপুর ও গুলশান হয়ে ভাটারা পযর্ন্ত ১৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন পঁাচ বাস্তবায়নে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এ দেশের সাবির্ক উন্নয়ন। জনগণ নৌকা মাকার্য় ভোট দিয়েছিল বলেই আমরা জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। ‘একটানা দুই টামর্ ক্ষমতায় আছি বলেই উন্নয়নের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পেরেছি।’ এই ইউলুপ চালু হওয়ায় প্রগতি সরণিসহ রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, মালিবাগ এবং মগবাজার এলাকার যানজট নিরসন হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। গৃহায়ন ও গণপূতর্ মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব পালন করেছে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের ১৭ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেনাবাহিনী তাদের ওপর অপির্ত দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।’ সব ধরনের কারিগরি মান বজায় রেখে দেশীয় সম্পদ এবং মেধা ব্যবহার করে সরকারের দেয়া প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নের সহযোগিতার জন্য গৃহায়ন ও গণপূতর্ মন্ত্রণালয়, রাজউক এবং সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। গৃহায়ন ও গণপূতর্মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহ, সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং প্রকল্প পরিচালক মেজর জেনারেল আবু সাঈদ মো. মাসুদ বক্তব্য রাখেন।