যাবজ্জীবনে আমৃতু্য কারাবাস নিয়ে রায় যেকোনো দিন

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
'যাবজ্জীবন মানে আমৃতু্য কারাবাস' আপিল বিভাগের এমন অভিমত নিয়ে পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায় যেকোনো দিন ঘোষণা হবে মর্মে সিএভি (অপেক্ষমাণ) রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এখন রায় ঘোষণার পর জানা যাবে, যাবজ্জীবন মানে আমৃতু্য কারাবাস কি না? বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রায়টি অপেক্ষমাণ রাখেন। এ বিষয়ে আইনি মতামত নেয়ার জন্য গত ১১ এপ্রিল চার আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ দেন আপিল বিভাগ। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ পান অ্যাডভোকেট এএফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান ও অ্যাডভোকেট মুনসুরুল হক চোধুরীর মতামত গ্রহণ করে আদালত। গতকাল অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে সর্বশেষ মতামত তুলে ধরেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও শিশির মুহাম্মদ মনির। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মুরাদ রেজা ও মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ। পরে আইনজীবী শিশির মুহাম্মদ মনির জানান, রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষ করে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছেন আদালত। এর আগে আদালতের রায়ে 'যাবজ্জীবন দন্ড পাওয়া মানে আমৃতু্য কারাবাস' এমন অভিমত দিয়ে আপিল আদালতের রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা এক আসামির আবেদনের শুনানি ১১ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ২০০১ সালে গাজীপুরে জামান নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার মামলার চূড়ান্ত রায়ে 'যাবজ্জীবন মানে আমৃতু্য কারাবাস' সর্বোচ্চ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ আসে। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা সিরাজুল ইসলাম গাজীপুর মডেল থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। দ্রম্নত বিচার আদালত ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর এ মামলার রায়ে তিন আসামি আনোয়ার হোসেন, আতাউর রহমান ও কামরুল ইসলামকে মৃতু্যদন্ডের রায় দেন দ্রম্নত বিচার ট্রাইবু্যনাল। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। তাদের মৃতু্যদন্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্সও (মৃতু্যদন্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট রায়ে দুজনের মৃতু্যদন্ড বহাল রাখেন। এরপর আসামি আনোয়ার ও আতাউর সাজা কমানোর জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। কামরুল পলাতক থাকায় আপিলের সুযোগ পাননি। দুই আসামির আপিল শুনানি করে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রম্নয়ারি যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ, যা আমৃতু্য কারাবাস হিসেবে গণ্য হবে। সঙ্গে সঙ্গে আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃতু্য কারাবাসসহ সাত দফা অভিমত দেন। ওই বছরের ২৪ এপ্রিল আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, দন্ডবিধির ৫৩ ধারা ও ৪৫ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদন্ড হবে আমৃতু্য কারাবাস। এর ফলে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত সবাইকে আমৃতু্য কারাগারে থাকতে হবে বলে ওই সময় জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আপিল বিভাগের দেয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামি আতাউর মৃধা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদন করেন।