কুমিলস্নার আদালতে আসামির ছুরিকাঘাতে আসামি নিহত

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না
ঘাতক মো. হাসান
কুমিলস্নায় আদালত অভ্যন্তরে একটি হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলমান সময় বিচারক, আইনজীবী ও অন্যান্য বিচার প্রার্থীদের সামনেই মো. হাসান নামের এক আসামি উত্তেজিত হয়ে একই মামলার মো. ফারুক নামের অপর এক আসামিকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ফারুককে প্রথমে কুমিলস্না সদর হাসপাতালে ও পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিলস্না মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিলস্নার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌসের আদালতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আসামি মো. ফারুক (২৮) কুমিলস্নার মনোহরগঞ্জ উপজেলার অহিদ উলস্নাহর ছেলে এবং ঘাতক হাসান জেলার লাকসাম উপজেলার ভোজপুর গ্রামের শহীদুলস্নাহর ছেলে। আদালত সূত্র, আইনজীবী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোববার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতে জেলার মনোহরগঞ্জ থানার ২০০৭ সালের একটি হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছিল। এ সময় ওই হত্যা মামলার আসামি হাসান হঠাৎ করে তার সহযোগী আসামি ফারুককে ছুরিকাঘাত করেন। এতে ফারুক রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়ে বিচারকের খাস কামরায় আশ্রয় নেন। এ সময় হাসান দৌড়ে ওই কামরায় গিয়ে ফারুককে আবারও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে তিনি ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় আদালতের পুলিশ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা হাসানকে ধরে ফেলেন। আসামি হাসানের আইনজীবী শাহনেওয়াজ সুলতানা জানান, ২০১৫ সালের একটি হত্যা মামলার হাজিরার দিন ধার্য তারিখ ছিল আজ (সোমবার)। এ মামলায় আসামি হিসেবে হাসান, ফারুক ও রিনা হাজিরা দিতে আসেন। এদিকে আদালতে মামলার আইনজীবী অ্যাড. নুরুল ইসলাম বলেন, ঘাতক আমাকেও ছুরি নিয়ে তাড়া করে। আদালতে একটি মামলার সাক্ষী দিতে আসা এএসআই ফিরোজ ও আমার সহকর্মী এড. সোমার সহযোগিতায় আমি প্রাণে বেঁচে যাই। আদালতে পুলিশ থাকার পরেও আসামিরা কিভাবে আইনজীবী ও আসামির ওপর চড়াও হয়ে খুনের ঘটনা ঘটায় তা আমার বোধগম্য নয়। আমি আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ভীষণ শঙ্কিত। আদালতে যাওয়া সাংবাদিকদের উদ্দেশে বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস বলেন, আমার সামনে একজন আসামিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হলো। আমার ওপরও হামলা হতে পারত। আমি ভীষণ শংকিত। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আদালতের পুলিশ পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি জানান, ঘাতক হাসানকে আটকসহ তার কাছ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। গুরুতর আহত ফারুককে প্রথমে কুমিলস্না সদর হাসপাতালে ও পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিলস্না মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ওই ব্যক্তি ও ঘাতক উভয় একটি হত্যা মামলার আসামি ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে আদালতে ছুটে যান কুমিলস্নার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এতটা নিরাপত্তার মাঝেও আসামি ছুরি নিয়ে কীভাবে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং দায়িত্বরত পুলিশের অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।