২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ২১৪ ডেঙ্গু রোগী

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২১৪ জন রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ হিসাবে প্রতি ৭ মিনিটে কমপক্ষে একজন ডেঙ্গুজ্বরের রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। জানা গেছে, বর্তমানে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৫। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে অসংখ্য ডেঙ্গুজ্বরের রোগী বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। (১ থেকে ১৫ জুলাই) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে যথাক্রমে ১২৪, ১২৮, ১২৪, ১৪৮, ১১৩, ১৮৬, ১৫০, ১৭৫, ১৭৪, ২২৭, ১৯১, ১৬৫, ১৮৮, ১৫৯ ও ২১৪ জন। এছাড়া চলতি মাসে মারা গেছে একজন নারী চিকিৎসক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২১৪ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মিটফোর্ড হাসপাতালে ৩৮ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৪ জন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩২ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ২১ জন, বারডেম হাসপাতালে ৭ জন, বিজিবি হাসপাতালে ১১ জন ও অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে ১০১ জন ভর্তি হয়েছেন। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চোখ রাখলেই ডেঙ্গু রোগীর পস্নাটিলেটের জন্য রক্ত চেয়ে সহযোগিতার স্ট্যাটাসের সংখ্যা দেখলে সহজেই অনুমান করা যায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মাত্র একজন নারী চিকিৎসকের মৃতু্য হলেও আক্রান্ত রোগীর স্বজনরা কখন কী হয়- এ আতঙ্কে ভুগছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ফলে রাজধানীর বেশকিছু নামিদামি স্কুলের শিক্ষার্থীদের কেউ অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি কিংবা সিক বেডে পরীক্ষা দিয়েছে বলে নিশ্চিত খবর পাওয়া গেছে। দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুলস্নাহসহ ডেঙ্গু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর ডেঙ্গুর ধরন পাল্টে গেছে। আগে যেমন তীব্র জ্বরের সঙ্গে গায়ে রেশ ওঠা, ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেত, এবার সে সব লক্ষণ ছাড়াও অনেক রোগীই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে জ্বর হলে ঘরে বসে চিকিৎসা না নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। স্বাস্থ্য অধিদপ্ততরের হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনেই এ মৌসুমের সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪৬৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে জুন মাসে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭৫৯ জন। একই সময়ে (জুলাই মাসে) গত বছর আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সর্বসাকুল্যে ২৯৫ জন। এদিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার কবল থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করতে বিভিন্ন পাড়া-মহলস্নায় ডেঙ্গু সচেতনতামূলক বার্তা প্রচারে মাইকিং জোরদার করছে। আজিমপুর এলাকার বাসিন্দা আজাহার আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুনেছি মশার ওষুধ নাকি কাজ করে না। আগামী বছরের আগে নতুন করে মশার ওষুধ কেনা হবে না। এখন সিটি কর্পোরেশন মাইকিং করে সচেতনতা সৃষ্টি করে দায় সারতে চাইছে। তারা মশার ওষুধ ছিটাচ্ছে না, আর ছিটালেও কাজ হচ্ছে না।