বন্যার আরও অবনতি ৫ শিশুসহ নিহত ৬

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। পস্নাবিত হয়েছে শত শত গ্রাম। বানভাসি মানুষ গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে ছুটে যাচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। ছবিটি গাইবান্ধার ফুলকড়ি উপজেলা থেকে মঙ্গলবার তোলা -যাযাদি
যাযাদি ডেস্ক দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে আসা পানির ঢলে পস্নাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। কুড়িগ্রাম, জামালপুর ও নেত্রকোনায় বন্যায় ৫ শিশুসহ এ পর্যন্ত ৬ জনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। প্রশাসন দুর্গতদের সহায়তায় উদ্যোগ নিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে, যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাঁধ ভেঙে বন্যাকবলিত চার উপজেলার ২১৩টি গ্রামের প্রায় ৩ লাখ মানুষ। পানি ঢুকেছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়। কুড়িগ্রামের চাক্তাবাড়ি ব্রহ্মপুত্রের বাঁধ ভেঙে নতুন করে ১০ গ্রামে পানি ঢুকেছে। কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কে যান চলাচল বন্ধ। লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলায় পানির তোড়ে দিশেহারা দুই পাড়ের মানুষ। ত্রাণের অপেক্ষায় শত শত মানুষ। নেত্রকোনায় নতুন করে পস্নাবিত ৫ উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্ধ ২২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পর্যাপ্ত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ স্থানীয় সংসদ সদস্যের। উত্তরের বন্যার পানির চাপে জামালপুরে যমুনার পানি রেকর্ড ভেঙে গতকাল ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। পানিবন্দি জেলার দুই শতাধিক গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ। পানিতে পড়ে গতকাল ইসলামপুরে এক শিশু এবং দেওয়ানগঞ্জে মারা যায় ৩ শিশু। রেললাইনে পানি ওঠায় বিঘ্নিত ট্রেন চলাচল। মৌলভীবাজারে নদীর পানির চাপে ৬ জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ঢুকছে পানি। সিলেটে ১৩ উপজেলার ১২টিই এখন বন্যা আক্রান্ত। নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহলস্নায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপর্যস্ত সুনামগঞ্জ, নতুন করে পস্নাবিত বেশ কয়েকটি এলাকা। সবমিলে দুর্ভোগে ১১ উপজেলার ২৫ লাখ মানুষ। তলিয়ে আছে বিভিন্ন জায়গার অন্তত ৩০ কিলোমিটার সড়ক। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করেছে প্রশাসন। এদিকে হবিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে ১২ গ্রাম পস্নাবিত। তবে বিবিয়ানা পাওয়ার পস্ন্যান্টের কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর: মৌলভীবাজার: দেশের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে কুশিয়ারা নদী আরও ফুঁসে উঠে গ্রামীণ ঘর-বাড়ি পস্নাবিত হয়েছে। এতে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৪৩টি গ্রামের হাজারো মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। এদিকে অভ্যন্তরীণ বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা ঢলে মনু ও ধলাই নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মনু ও ধলাই নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বহু ঘর-বাড়ি। বিশেষ করে মনু নদের পানি বাড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ অনেক বাঁধ নিয়ে শঙ্কায় আছেন মৌলভীবাজার শহরের কয়েক হাজার মানুষ। ইতোমধ্যেই শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কের পশ্চিমবাজারে মনু থেকে হুহু করে পানি ঢুকছে শহরে। স্থানীয়রা বলেছেন, এদিক দিয়ে কোথাও যদি বাঁধ ভেঙে যায় তবে ১৫-২০টি মার্কেটসহ ৩ শতাধিক বাসাবাড়ি পস্নাবিত হবে। মঙ্গলবার মৌলভীবাজারে বৃষ্টি না হলেও পানি হুহু করে বাড়ছে এখনো। রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউপির ছিক্কাগাঁও, কামালপুর, আমনপুর, সুরিখাল, যোগীকোনা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাঁও, জোড়াপুর ও ফতেপুর ইউনিয়েনের সাদাপুর, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, শাহাপুর, জাহিদপুরসহ ২০-২৫টি গ্রাম পস্নাবিত হয়েছে। হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বাহুবলে টানা বৃষ্টিতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। নদীতে পানির স্রোতে বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাত জেগে মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পাহারা দিচ্ছে। উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করায় মৌসুমি ফসলসহ বিভিন্ন ফসলাদির ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে, বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। উপজেলার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে বয়ে যাওয়া করাঙ্গী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। নদীর একপাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় অন্তত ২০টি গ্রাম পস্নাবিত হয়েছে। নদীর অপরপাশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধেরও বিভিন্ন স্থান রয়েছে হুমকির মুখে। যে কোনো সময় একাধিক ভাঙন সৃষ্টি হয়ে জনবতিসহ ফসলাদি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে, উপজেলা সদরস্থ দীননাথ ইনস্টিটিউশন সাতকাপন সরকারি হাইস্কুলে করাঙ্গী নদীতে সৃষ্ট বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। করাঙ্গী নদীর বাঁধের উপর পানি প্রবেশ করে রানীগাঁও, সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের ১৫-২০টি গ্রাম পস্নাবিত হয়েছে। শেরপুর : শেরপুরের পাঁচটি উপজেলার বন্যার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রোববার দিবাগত গভীর রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে এখন প্রায় লাখো মানুষ পানিবন্দি রয়েছে ওইসব উপজেলায়। কিছু জায়গায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে পানিবন্দি মানুষের দাবি, সরকারিভাবে ত্রাণ পাচ্ছেন না তারা। এদিকে জেলা পুলিশ ও কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। সরকারিভাবে বন্যার্তদের জন্য ৩৫ টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে এবং সরকারের কাছে আরও ২৫০ টন চাল চাওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে। বন্যার কারণে জেলায় বিভিন্ন এলাকায় প্রায় অর্ধশত স্কুল বন্ধ রয়েছে। জানা গেছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হয়েছে। বন্যায় ঝিনাইগাতী সদর, ধানশাইল, মালিঝিকান্দা ও হাতিবান্ধা ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিশেষ করে গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন গৃহস্থরা। বিভিন্ন এলাকার রোপা আমন ধানের বীজতলা ও সবজি পানিতে নিমজ্জিত এবং কাঁচা ঘর, সেতু ও গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় দুইশ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ইসলামপুর (জামালপুর) : বন্যায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে জামালপুরের ইসলামপুর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায়। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, বাসভবন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, কৃষি অফিসারের কার্যালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়সহ সব দাপ্তরিক কার্যালয় এখন পানির নিচে। এরইমধ্যে আঞ্চলিক সড়কগুলোতে পানি উঠায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রেল লাইনে পানি উঠায় ঝুঁকি নিয়ে রেল চলছে। যে কোনো সময় বন্ধ হতে পারে রেল যোগাযোগও। অপর দিকে বন্যায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ইসলামপুর। উপজেলা পৌর এলাকাসহ ৯টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়েছে বলে ইউপির চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন। লালমনিরহাট : লালমনিরহাটের দুর্গত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও বানভাসি মানুষজনের দুর্ভোগ কমেনি। মঙ্গলবার বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে আছে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোর অধিকাংশ বাড়িতে। এখনো দেড় থেকে দুই ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে বিভিন্ন ফসলি ক্ষেত। তলিয়ে আছে রাস্তা-ঘাটও। তিস্তার বামতীর রক্ষাবাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়া মানুষজনের মধ্যে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের মাঝে যে পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে তা খুবই সামান্য বলে জানিয়েছে বন্যাকবলিত মানুষজন। কাউনিয়া (রংপুর) : পাহাড়ি ঢলে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চল ও তীরবর্তী গ্রামগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে পানিবন্দিদের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে হারাগাছ, ঠাকুরদাস ও চরনাজিরদহ এলাকাগুলোয় এখনো বন্যার পানিতে ডুবে আছে শত শত ঘরবাড়ি। তারা এ পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পায়নি বলে অভিযোগ করেছে। হারাগাছ, ঠাকুরদাস গ্রামের সেলিনা বেগম বলেন, 'ঘরত পানিতে ভরপুর। রান্না করার উপায় নাই। বাড়িতে থাকার উপায় নাই। এজন্য কয়েকটি টিন দিয়ে ছাপড়া ঘর তুলে সন্তান ও গবাদিপশু নিয়ে বাঁধত আশ্রয় নিয়েছি। আইজ চারদিন ধরি বাঁধত আছি কায়ও খোঁজ নেয় নাই।' রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা ও ধরলার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের ২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের তীব্র সংকট। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বর্ষণে নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হওয়ায় ফসলি জমির ভাদাই ধান, আমন বীজতলা, পাট, ভূট্টা, শাক-সবজি, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি মাছের খামারসহ প্রায় দুই শতাধিক ছোট-বড় পুকুর। পানিবন্দি মানুষজন তাদের পরিবার ও গবাদিপশু হাঁস-মুরগি নিরাপদ আশ্রয়ে নিচ্ছে। ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রবহমান ধরলা নদীবেষ্টিত ৫ ইউনিয়ন- নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, ফুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের মোট ১১ হাজার ১৮৩ পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। হাজার হাজার মানুষ উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ বাড়িতেই টং বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এরমধ্যে ফুলবাড়ী সদরের ফুলসাগরসংলগ্ন চন্দ্রখানা নামাটারী এলাকার মানুষ গবাদিপশুসহ আশ্রয় নিয়েছে হ্যালিপ্যাড ও জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে। এখানে তারা তাঁবু টানিয়ে রাত যাপন করছে। চিলমারী (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে পানি ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পস্নাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অন্তত ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। রানীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁয় নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নান্দাই বাড়ি থেকে মালঞ্চি হয়ে কৃষ্ণপুর পর্যন্ত বাঁধের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফাটল ধরে হুমকির মুখে পড়েছে। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ফুঁসে উঠেছে নদী। এতে যে কোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। ওই এলাকার আব্দুল মজিদ, আবুল হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রবিন আহম্মেদসহ অনেকেই জানান, তিন দিন ধরে বাঁধের উপরেই রাত কাটাতে হচ্ছে। না জানি কখন বাঁধ ভেঙে যায়। মান্দা (নওগাঁ) : নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীসংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভেঙে সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে আত্রাই ও ফকির্ণী নদীর উভয়তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট। গত কয়েকদিনের একটানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হু হু করে বাড়ছে আত্রাই নদীর পানি। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আগামি ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। আবহাওয়া পরিষ্কার হলে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে। মিরসরাই (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক চাঁদপুর-গোভনীয়া সড়ক বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে এই রাস্তায় চলাচলকারী যাত্রী ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার পানির চাপে গত রোববার সড়কটির বিভিন্ন অংশ ভেফু তলিয়ে যায়। ফলে মিরসরাই সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কালামিয়া দোকান, গোভনীয়া, নাজিরপাড়া, কচুয়া ও আবুতোরাব অঞ্চল সহ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ।