টাকা পাননি রাসেল গ্রিনলাইনের মামলা ছাড়লেন আইনজীবী

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে গ্রিনলাইন গাড়ির চাপায় পা হারানো রাসেল সরকার -ফাইল ছবি
বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে অবশিষ্ট ক্ষতিপূরণের প্রথম কিস্তি দেয়নি গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এদিকে আদালতের আদেশ না মানায় গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষের হয়ে আর মামলায় লড়বেন না বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী অজি উলস্না। রাসেল মাসিক পাঁচ লাখ টাকা কিস্তিতে ক্ষতিপূরণের অবশিষ্ট ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে গত ২৫ জুন নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ করে ১৫ তারিখে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন (কমপস্নায়েন্স রিপোর্ট) দিতে বলে আদালত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এ বিষয়ে আদেশের জন্য রেখেছিল। রাসেলকে ক্ষতিপূরণ পরিশোধের প্রতিবেদন না পেয়ে এদিন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামী ২১ জুলাই পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছে। আদালতে গ্রিনলাইন পরিবহনের আইনজীবী অজি উলস্না, বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএর পক্ষে রাফিউল ইসলাম রাফি, রিট আবেদনের পক্ষে খোন্দকার শামসুল হক রেজা ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুলস্নাহ আল মাহমুদ বাশার শুনানি করেন। মঙ্গলবার আদেশের পর রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা বলেন, 'মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে রাসেলকে দিতে হাইকোর্টের আদেশ পালন করেনি গ্রিনলাইন। তারা সর্বশেষ আদেশের পর কোনো টাকা দেয়নি। এমনকি কোনো যোগাযোগেও করেনি।' 'গ্রিনলাইন হাইকোর্টের আদেশ পালন না করে চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। তাদের যদি সমস্যা থাকে তাহলে সেটা আদালতকে জানাতে পারত। কিন্তু তারা কিছুই করেনি।' এ সময় গ্রিনলাইনের আইনজীবী অজি উলস্নাহ বলেন, 'হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন সে আদেশ গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ পালন না করায় আমি তাদের আইনজীবী হিসেবে নিজেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের কাছে আমার সিদ্ধান্ত পাঠিয়ে দেব।' গত বছরের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাস চাপা দেয় প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে। তাকে বাঁচাতে একটি পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। রাসেলের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে সাবেক সাংসদ উম্মে কুলসুমের করা এক রিট আবেদনে চিকিৎসা খরচ বাদেও ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিনলাইনকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগেও ওই আদেশ বহাল থাকে। এরপর গত ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারকে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করে গ্রিনলাইন, বাকি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য এক মাস সময় পায়। ওই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও কোনো অর্থ তারা পরিশোধ না করায় গত ১৫ মে আদালত আরও সাতদিন সময় দিয়ে পুরো অর্থ পরিশোধের বিষয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। এরপরও গ্রিনলাইন পরিবহন পা হারানো রাসেলকে কোনো টাকা না দেয়ায় সর্বশেষ গত ২৫ জুন ক্ষতিপূরণের টাকা কিস্তিতে পরিশোধের আদেশ দেন আদালত।