গোলাগুলিতে নারীর মৃতু্য

টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে দুই ইয়াবা পাচারকারী নিহত

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বিজিবি বলছে, নিহত দুইজন ইয়াবা পাচারকারী ছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফের জাদিমোরা-সংলগ্ন শিকলগাড়ার নাফ নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্য জানান টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান। নিহত দুই ব্যক্তি হলেন মো. জাবেদ মিয়া (৩৪) ও মো. আসমাউল সওদাগর (৩৫)। জাবেদ যশোরের কোতোয়ালির বসুন্দিয়ার মো. জব্বার আলীর ছেলে। আর আসমাউল চাঁদপুরের দক্ষিণ মতলবের চরমুকুন্দির মো. রেজোয়ান সওদাগরের ছেলে। বিজিবির ভাষ্য, ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র (এলজি), তিনটি তাজা গুলি এবং ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবির তিন সদস্য আহত হয়েছেন। টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, মঙ্গলবার রাতে টেকনাফের জাদিমোরার নাফ নদী-সংলগ্ন শিকলগাড়ার এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান বাংলাদেশে আসছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এই তথ্যের সূত্র ধরে দমদমিয়া বিজিবির একটি টহল দল ওই এলাকায় যায়। তারা কয়েকজন ব্যক্তিকে অন্ধকারের মধ্যে নাফ নদীর তীর থেকে উঠে আসতে দেখে। তারা নদী থেকে খালে ঢুকলে বিজিবির টহল দল চ্যালেঞ্জ করে। বিজিবিকে লক্ষ্য করে সশস্ত্র ইয়াবা পাচারকারীরা গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবির তিন সদস্য মো. মতিউর রহমান, ইমরান হোসেন ও মো. রেজাউল আহত হন। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে সংঘবদ্ধ মাদক পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই মাদক পাচারকারীকে উদ্ধার করা হয়। দুইজনের শরীরের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি পাওয়া যায়। গুলিবিদ্ধ মাদক পাচারকারীদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। কক্সবাজারে নেয়ার পথে তারা মারা যান। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শোভন দাস বলেন, রাতে বিজিবি পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে তিনজন বিজিবির সদস্য। বাকি দুইজন বেসামরিক লোক। বিজিবি সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। আর অন্য দুইজনকে (জাবেদ ও আসমাউল) কক্সবাজারে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। তাদের বুক ও পিঠে গুলির একাধিক চিহ্ন দেখা গেছে। বিজিবি জানায়, জাবেদ ও আসমাউলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গের রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। গত বছরের ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র?্যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধ' ও এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারসহ নানা ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ১৩৩ জন নিহত হয়েছেন। গোলাগুলিতে নারী নিহত : পুলিশ এ ছাড়া কক্সবাজারের টেকনাফে দুই দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলিতে হামিদা বেগম (৩২) নামের একজন নারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। তাদের ভাষ্য, নিহত নারীও একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে টেকনাফ থানার পুলিশ। বুধবার ভোররাত ৪টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা বাজারের পূর্ব দিকে নাফ নদী-সংলগ্ন খোলা জায়গায় এ ঘটনা ঘটে। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, বুধবার ভোররাতে দুই দল মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা বণ্টনকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থানে করছে- এমন তথ্য পায় পুলিশ। পুলিশের একটি দল দ্রম্নত ঘটনাস্থলে গেলে তখনো গোলাগুলির ঘটনা চলছিল। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৫টি পাল্টা গুলি ছোড়ে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ওই এলাকায় তলস্নাশি চালিয়ে একজন নারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। এ সময় দেশীয় দুটি অস্ত্র (এলজি), ৮টি কার্তুজ, ১২টি গুলির খোসা এবং ৫ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। ওসি বলেন, উপস্থিত লোকজন, স্থানীয় দফাদার এবং গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) গুলিবিদ্ধ নারীকে হ্নীলার জাদিমোরার হামিদা বেগম বলে শনাক্ত করেন। পরে হামিদাকে দ্রম্নত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স নেয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শোভন দাস বলেন, হাসপাতালে আনার আগে গুলিবিদ্ধ নারীর মৃতু্য হয়েছে। নিহত নারীর বুক ও পেটে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।