রাজশাহীতে শিশুর গলা কাটার গুজব আতঙ্ক

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

রাজশাহী অফিস
রাজশাহীতে শিশুর মাথা কাটার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে রাজশাহীর সর্বত্র একই আলোচনা চলছে। বিশেষ করে রাজশাহীর বাগমারা ও আশপাশের উপজেলাগুলোতে এ গুজব বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য অনেকেই গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাচ্ছেন। গুজব ছড়িয়ে পড়ে গভীর রাতে বাগমারা উপজেলার সূর্যপাড়া গ্রামে এক শিশু গলা কাটা বা চেষ্টা হয়েছে। এতে অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক জড়িয়ে পড়ে। তবে এ গুজবে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুদের অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে শোকেসের কাচ খসে পড়ে মিজানুর রহমান মিজান (৫) নামের এক শিশুর গলার পাশে কেটে যায়। রাতেই শিশুটি প্রথমে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শিশুটিকে হাসপাতালের ৩৩ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওসি বলেন, রাতেই তিনি নিজে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই ঘরে খসে পড়া কাঁচের টুকরো পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে কোন কারণে শোকেসের কাঁচ খসে পড়ে শিশুটির গায়ের উপর পড়ে। মায়ের সঙ্গে শিশুটি মেঝেতে শুয়ে ছিল। কিন্তু এ ঘটনাটি ছেলেধরা শিশুর গলা কাটার চেষ্টা চালিয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। আহত ওই শিশুর পিতার নাম মিঠুন রহমান (৩২)। শিশুটির মায়ের নাম ফিরোজা বেগম। তাদের বাড়ি উপজেলার সূর্যপাড়া গ্রামে। শিশুটির দাদি রেখা বেগম জানান, তার ছেলে মিঠু খাটের উপর শুয়ে ছিল। আর ছেলের বউ নাতিকে নিয়ে মেঝেতে ছিল। গরমের কারণে দরজা খোলা ছিল। রাতে তাদের চিৎকার শুনে ঘরে গিয়ে শোকেসের কাচ ভাঙা পান। তবে পুত্রবধূ ফিরোজা বেগমের বরাদ দিয়ে রেখা বেগম দাবি করেন, 'রাতে একজন লোক ঘরে প্রবেশ করে তার নাতির গলা কাটার চেষ্টা করে। এ সময় তার পুত্রবধূর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এতে শোকেসের কাঁচ ভেঙে পড়ে'। তবে শিশুটির গলা কীভাবে কেটে গেছে তা বলতে পারেননি তিনি। প্রতিবেশী কলেজ শিক্ষক শাহিনুর রহমান বলেন, হইচই শুনে রাতেই ওই বাড়িতে যান। মিঠুন ও তার স্ত্রী ফিরোজার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাদের কথায় মনে হয়েছে একজন লোক তাদের ঘরে ঢুকেছিল এবং তার সঙ্গে মিঠুনের স্ত্রীর ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় ধাক্কা খেয়ে শোকেসের কাচ খসে পড়ে। এতে শিশুটির গলা কেটে যায়। তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু ফিরোজা বলেছে, একজন লোক ঘরে ডুকে তার ছেলের গলা কাটার চেষ্টা করছিল সেই কথাটি ছড়িয়ে পড়েছে। এতে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শিশুদের স্কুলে পাঠাবে কিনা অনেকেই তার কাছে জানতেও চেয়েছেন।' তার গুজবে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম। তিনি বলেন, শিশু মিজানুর রহমানের গলা কেটে যাওয়ার বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে। কাচ পড়ে তার গলা সামান্য কেটে যায়। এটি শুধুই গুজব ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়। যারা এ ধরনের গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে।